—প্রতীকী চিত্র।
পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়ায় ঢোকার পর নাগালে এসেছিল জ়িনত। সুযোগ পেয়ে ঘুমপাড়ানি গুলিও ছোড়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে বাগে আনা গেল না বাঘিনিকে। বন দফতর সূত্রে খবর, ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার পরেই পালিয়ে গিয়েছিল জ়িনত। তবে জঙ্গলের মধ্যেই কোথাও রয়েছে সে। এই পরিস্থিতিতে চারদিকে আগুন জ্বালিয়ে বাঘিনিকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা চলছে।
জঙ্গলে আগুন জ্বালিয়ে জ়িনতকে খাঁচাবন্দি করার চেষ্টা। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার সকালে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার গোঁসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল বাঘিনি জ়িনত। বাঘিনির অবস্থান নিশ্চিত হতেই তৎপর হয় বন দফতর। গ্রাম লাগোয়া জঙ্গল জাল দিয়ে ঘিরে খাঁচা পাতা হয়। জঙ্গলের মধ্যে থাকা পাঁচটি পরিবারকে নিরাপত্তার জন্য সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এর পরেই ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাঘিনিকে কাবু করার বন্দোবস্ত শুরু হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, জ়িনত নজরে আসতেই গুলি ছুড়েছিলেন বনকর্মীরা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। গুলি ছোড়ার পর বাঘিনি ফের জঙ্গলে ঢুকে গিয়েছিল। তার পর থেকে আর সে বনকর্মীদের নজরে আসেনি।
গত কয়েক দিন ধরে পুরুলিয়ায় বন দফতরকে কার্যত নাকানিচোবানি খাইয়েছিল জ়িনত। শনিবার আস্তানা বদলে সে পৌঁছয় গোঁসাইডিহি গ্রামে। ভোরের দিকে বাঘিনির গর্জন শুনতে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। এলাকায় তার পায়ের ছাপও দেখা যায়। তা থেকে গ্রামবাসীরা নিশ্চিত হয়েছিলেন, গ্রাম থেকে মাত্র কয়েকশো মিটার দূরে জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে। বাঘিনির গলায় থাকা রেডিয়ো কলার সিগন্যাল ট্র্যাক করে সেখানে পৌঁছে যান বনকর্মীরাও। তাঁরা জানতে পারেন, গ্রামের অদূরেই মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া ছোট জঙ্গলে রয়েছে জ়িনত। এর পরেই দ্রুত গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলা হয় নাইলন দড়ি দিয়ে। গ্রামবাসীদের উপর বাঘিনির হামলা ঠেকাতে গ্রামের রাস্তাও জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গলে একাধিক খাঁচা পাতার পাশাপাশি দু’টি মহিষকে টোপ হিসাবে দেওয়া হয়।
জ়িনতের ভয়ে আতঙ্কিত গোঁসাইডিহি। এর জেরে শনিবার গ্রামের আইসিডিএস কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছিল। পড়ুয়ারা স্কুলমুখো না হওয়ায় দুপুরের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় স্থানীয় গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।