গ্রিন জ়োনে ছাড়  •  কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরে কিছু ছাড় অরেঞ্জ, রেডেও

১৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়াল মোদী সরকার

সরকারি সূত্রের মতে, এখন প্রতিদিন দেশে গড়ে প্রায় দু’হাজার লোক নতুন করে করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২০ ০৪:৪১
Share:

প্রতীকী ছবি

আগামী ৪ মে থেকে তৃতীয় দফায় মোট ১৪ দিন, অর্থাৎ ১৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়াল নরেন্দ্র মোদী সরকার। তবে আগামী সোমবার থেকে শর্তসাপেক্ষে একাধিক ছাড়ের ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি, কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরের রেড জ়োনেও মিলবে কিছু ছাড়।

Advertisement

সরকারি সূত্রের মতে, এখন প্রতিদিন দেশে গড়ে প্রায় দু’হাজার লোক নতুন করে করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ৪ মে থেকে লকডাউন সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নিলে প্রবল গতিতে ছড়াতে পারে সংক্রমণ। তাই আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক করে লকডাউন ফের বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি আনতে গ্রিন ও অরেঞ্জ জ়োনেই শুধু নয়, রেড জ়োনেও বেশ কিছু ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। যদিও কন্টেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ সংক্রমিত এলাকার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবেই না। কন্টেনমেন্ট এলাকার বাইরে হলেও রেড জ়োনে ছাড় দেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশেষত গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় নিয়মবিধি কড়া ভাবে পালন নিয়েই যখন প্রশ্ন রয়েছে।

দেশের কোন জেলা কোন জ়োনে, গত রাতেই সে বিষয়ে রাজ্যগুলিকে জানিয়েছিল কেন্দ্র। দেশের ৭৩৩টি জেলার মধ্যে সেই সব জেলাকে গ্রিন জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে এ যাবৎ একটিও করোনা সংক্রমণের খবর মেলেনি বা গত ২১ দিনে সেখানে কোনও সংক্রমণের খবর নেই। সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা, সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার হার, পরীক্ষা ও নজরদারিতে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে রেড জ়োনের জেলাগুলিতে। যে জেলাগুলি উপরোক্ত দুই শ্রেণিতে পড়ছে না, সেগুলি অরেঞ্জ জ়োন। কেন্দ্র জানিয়েছে, একটি জেলার মধ্যে এক বা একাধিক পুরসভা থাকলে, পুর ও পুর এলাকার বাইরে থাকা এলাকাকে আলাদা এলাকা হিসেবে গণ্য করতে হবে। ওই ধরনের এলাকায় ২১ দিন টানা নতুন আক্রান্তের সন্ধান না-মিললে তারা এক ধাপ উন্নীত হতে পারে।

Advertisement

এ যাবৎ রেড জ়োন ও কন্টেনমেন্ট এলাকায় কড়া ভাবে লকডাউনের নিয়ম পালনে জোর দিয়ে এসেছে কেন্দ্র। তৃতীয় দফাতেও কন্টেনমেন্ট এলাকায় ছাড় থাকছে না। তবে রেড জ়োনে তার বাইরের এলাকায় আগামী সোমবার থেকে কিছু নিয়ম শিথিল করা হচ্ছে। রেড জ়োনে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। তবে ৩৩ শতাংশ কর্মীই রোজ উপস্থিত হতে পারবেন। সংক্রমণ এড়াতে তাঁদের যাতায়াতে নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি দফতর খোলা থাকছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, গ্রিন জ়োনে গ্রামীণ ও শহুরে এলাকায় আর্থিক কর্মকাণ্ডে সচলতা আনতে দেওয়া ছাড় তৃতীয় দফাতেও থাকবে।

আরও পড়ুন: সামাজিক দূরত্ব মেনেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ ট্রেন, সায় দিল কেন্দ্র​

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে তৃতীয় দফায় রেড জ়োনের গ্রামীণ এলাকায় কিছু ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, গ্রামীণ এলাকায় থাকা শিল্প ও নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। চালু করা যাবে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পও। খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ ইউনিট ও ইটভাটা খোলার অনুমতি মিলেছে। গ্রামীণ এলাকায় খোলা যাবে সব ধরনের দোকানও। কৃষিকাজ, পশুপালন জাতীয় কাজে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম খোলার যেমন অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তেমনই জল, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, ইন্টারনেট, ক্যুরিয়ারের মতো জন-পরিষেবা খোলা হচ্ছে। মূলত গ্রামীণ এলাকায় কাজ সৃষ্টি ও মানুষের হাতে নগদ অর্থের জোগানের জন্যই ওই সিদ্ধান্ত।

আরও পড়ুন: করোনা উপসর্গ নিয়ে রোগীর মৃত্যু সাগর দত্ত হাসপাতালে, ভাঙচুর, তাণ্ডব​

শহর এলাকায় বাণিজ্যিক কাজের প্রশ্নেও ছাড় দেওয়া হয়েছে রেড জ়োনে। সংবাদমাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা, কলসেন্টার, কোল্ড স্টোরেজ, ওষুধ ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী সংস্থা, চটকল, প্যাকেজিং শিল্প দূরত্ব-বিধি মেনে খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এসইজেড, রফতানি মূলক ক্ষেত্র, শিল্পতালুক ও শিল্পনগরীর কারখানাগুলিতেও কাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শহর এলাকায় পাড়া ও আবাসনে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, এমন দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। খুলবে না শপিং মল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement