সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই
করোনাভাইরাস ও লকডাউনের মোকাবিলায় আর্থিক প্যাকেজের মধ্যে ঢুকে পড়ল বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তও। এ বার কার্যত সব সরকারি ক্ষেত্রের জন্যই বেসরকারিকরণের দরজা পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দিল কেন্দ্র। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ ঘোষণার শেষ কিস্তিতে রবিবার নির্মলা সীতারামন জানিয়ে দিলেন, প্রশাসনিক খরচ কমানো, একই ক্ষেত্রে একাধিক সংস্থার উপস্থিতি কমাতে ঢালাও বেসরকারিকরণের রাস্তায় হাঁটবে সরকার। তার জন্য ঘোষণা হবে নয়া নীতি। জোর দেওয়া হবে সংযুক্তিকরণেও।
বুধবার থেকে প্রতিদিন ধাপে ধাপে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের প্যাকেজ ঘোষণা করছেন নির্মলা সীতারামন। রবিবার তার পঞ্চম দফায় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে প্রায় পুরোপুরি বেসরকারিকরণের ঘোষণা করলেন নির্মলা সীতারামন। সেই প্রক্রিয়া কী ভাবে হবে, তা বোঝাতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘‘নতুন আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে সরকারি সংস্থাগুলির জন্য নতুন নীতি ঘোষণা করা হবে। স্ট্র্যাটেজিক সেক্টরগুলিতে অন্তত একটি সংস্থাকে সরকারি হাতে রাখা হবে। বাকিগুলিতে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হবে।’’
দেশে ব্যাঙ্কিং, বিমার মতো ক্ষেত্রে একাধিক সংস্থা রয়েছে। তার মধ্যে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে আগেই দু’দফায় সংযুক্তিকরণ হয়েছে। অর্থাৎ কয়েকটি ব্যাঙ্ককে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেই প্রক্রিয়া চালু থাকবে। তার সঙ্গে যে সব ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ন্ত্রণ রাখতেই হবে অর্থাৎ স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর বা নির্ণায়ক ক্ষেত্র, তার তালিকা তৈরি হবে। সেই তালিকা পরে ঘোষণা করা হবে। নির্ণায়ক ক্ষেত্রে অন্তত একটি সংস্থা সরকারের হাতে থাকবে। অ-নির্ণায়ক (নন-স্ট্র্যাটেজিক) ক্ষেত্র পুরোপুরি বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ফের রেকর্ড! ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি ৪৯৮৭, দেশে করোনা আক্রান্ত ছাড়াল ৯০ হাজারের গণ্ডি
কেন এই সিদ্ধান্ত? অর্থমন্ত্রীর কথায়, ‘‘অপ্রয়োজনীয় প্রশাসনিক খরচ কমানো হবে। স্ট্র্যাটেজিক সেক্টরে একাধিক সংস্থা কমিয়ে একটি বা সর্বোচ্চ চারটি করা হবে। অন্য সংস্থাগুলিকে বেসরকারিকরণ অথবা সংযুক্তিকরণ কিংবা শেয়ার হোল্ডিং সংস্থায় পরিণত হবে।’’
আরও পড়ুন: গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে না তো! শুরু সমীক্ষা
এ ছাড়াও এ দিন ব্যবসা ক্ষেত্রে একাধিক ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। তার মধ্যে রয়েছে দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা, ছোটখাটো ভুল-ত্রুটিকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য না করার মতো পদক্ষেপ। নির্মলা সীতারামন জানিয়েছেন, দেউলিয়া আইনের ২৪০-এ ধারায় সংশোধনী আনা হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে নতুন কোনও দেউলিয়া ঘোষণার মামলা শুরু করা যাবে না। দেউলিয়া প্রক্রিয়ার সীমা এক লক্ষ থেকে বাড়িয়ে এক কোটি করা হচ্ছে। এই নয়া নীতির জন্য আপাতত অধ্যাদেশ জারি করা হবে। সংসদ খুললে আনা হবে সংশোধনী। এ ছাড়া সংস্থাগুলির ছোটখাটো ভুল-ত্রুটিকে ফৌজদারি আইনের বাইরে আনার জন্যও নয়া নীতি আনা হবে।