কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা।
কিছু দিন আগে নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও কাজ হয়নি। তাই বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পণ্য পরিবহণ চালু করতে ফের নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় পণ্য পরিষেবা কেন এখনও চালু করা হল না, সেই প্রশ্ন তুলে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে মঙ্গলবার কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা। রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ তুলেছেন তিনি। বুধবার নবান্ন জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ওই চিঠির উত্তর দেওয়া হবে। রাজ্য অতীতে একাধিক বার কেন্দ্রকে জানিয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে গতিবিধির বাধা সরানো হলেও আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা এবং সীমান্ত পারাপারের অনুমতি যেন এখনই দেওয়া না-হয়। কারণ, রাজ্য মনে করছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্ত পারাপার হলে করোনা-সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে বাংলায়।
কেন্দ্র ২৪ এপ্রিলই জানিয়েছিল, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে জরুরি জিনিসপত্রের চলাচলে ছাড় দিতে হবে। সেই নির্দেশ রূপায়ণ করে একটি রিপোর্টও পাঠাতে বলেছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার পাঠানো চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব লিখেছেন, রাজ্যের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনও রিপোর্ট এখনও পায়নি কেন্দ্র। তারা জানতে পেরেছে, পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পণ্য চলাচল এখনও চালু হয়নি। ফলে অসংখ্য ট্রাক জরুরি জিনিসপত্র নিয়ে বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় আটকে রয়েছে। বহু ট্রাকচালক বাংলাদেশ থেকে ফিরছিলেন। সীমান্ত পেরোনোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের। তাঁরা আটকে আছেন ও-পারেই।
১ মে কেন্দ্র নতুন লকডাউন বিধি সংক্রান্ত নির্দেশিকায় জানিয়েছিল, কোনও রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নিজেদের এলাকার সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পণ্য চলাচল বা স্থল-বাণিজ্য বন্ধ করতে পারবে না। সেই বিষয়টির উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জানান, একতরফা ভাবে পদক্ষেপ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সীমান্ত দিয়ে জরুরি পণ্য চলাচল বন্ধ রেখেছে। এটা যে দেশের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আইনি বাধ্যবাধকতার উপরে বড় প্রভাব ফেলতে পারে, তার উল্লেখ করে তিনি চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ বিপর্যয় মোকাবিলা আইন এবং সংবিধানের ২৫৩, ২৫৬ এবং ২৫৭ নম্বর ধারার অধীনে দেওয়া কেন্দ্রের নির্দেশ অমান্য করার শামিল। রাজ্যের এলাকাভুক্ত সব সীমান্তে পণ্য চলাচলে অবিলম্বে ছাড় দিতে মুখ্যসচিবকে ফের অনুরোধ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব।
আরও পড়ুন: কো-মর্বিডিটি তত্ত্ব কেন্দ্রেরও, বিরোধীদের কটাক্ষ তৃণমূলের
চিঠির প্রেক্ষিতে এ দিন নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের রাজ্যের শীর্ষ আমলাকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব কী লিখেছেন, সেটা তো সাংবাদিক বৈঠকের বিবেচ্য নয়। সামগ্রিক ভাবে লকডাউন ও প্রোটোকল মানা হচ্ছে। পেট্রাপোলে কিছু ‘পাবলিক ইসু’ রয়েছে। কিছু মানুষ সীমান্তে একটু ‘ইমোটিভ কমোশনে’ রয়েছেন। তাই বিষয়টা এই দিশায় চালিত হচ্ছে। এটা সাংবাদিক বৈঠকের বিষয় নয়। সব দিক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সময়মতো জানাব।’’ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেক বিষয় রয়েছে। সেগুলি বিবেচনার পরে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান আলাপনবাবু।
আরও পড়ুন: বাবার চিকিৎসার টাকায় বর্ধমানে দুঃস্থদের সেবা মহিলা কনস্টেবলের
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)