National News

পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সরব, তাতেই কি সরানো হল কর্নাটকের আমলাকে?

কর্নাটকে প্রথম করোনা-সংক্রমণের পর অনলাইনে এক অভিনব  প্রচার শুরু করেছিলেন মনিবন্নন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ১৪:৩৪
Share:

রাজ্যের এক শীর্ষ আমলা ক্যাপ্টেন মনিবন্ননের বদলি ঘিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে কর্নাটকে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

রাজ্যের এক শীর্ষ আমলার বদলির নির্দেশ ঘিরে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ল কর্নাটক সরকার। অভিযোগ, পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে সরব হওয়ার ‘শাস্তি’ হিসেবে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই শীর্ষ আমলাকে। গোটা বিতর্কে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে রাজ্যে। ওই আমলাকে পুরনো পদে বহাল করার দাবিতে সরব হয়েছেন কর্নাটকের নাগরিক সংগঠনগুলির একাংশ। এমনকি, এ নিয়ে অনলাইনে প্রচারও শুরু করেছে তারা।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়। রাজ্যের শ্রম দফতরের মুখ্যসচিব ক্যাপ্টেন মনিবন্ননকে গত কাল কোনও রকমের আনুষ্ঠিকতা ছাড়াই বদলির নির্দেশ দেয় কর্নাটক সরকার। শ্রম দফতরের পাশাপাশি তিনি তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের কাজকর্মও সামলাতেন। তাঁর জায়গায় মহেশ্বর রাওকে দায়িত্ব দিলেও মনিবন্ননের নতুন পদের ঘোষণা করেনি রাজ্য প্রশাসন। এই বদলির নির্দেশ ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। রাজ্যবাসীর একাংশের অভিযোগ, লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার, দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হওয়ার ফলেই শ্রম দফতর থেকে সরিয়ে দেওয়া হল এই শীর্ষ আইএস আধিকারিককে।

মাস দুয়েক আগে কর্নাটকে প্রথম করোনা-সংক্রমণের পর এই ভাইরাস নিয়ে অনলাইনে এক অভিনব প্রচার শুরু করেছিলেন মনিবন্নন। এ কাজে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে অনলাইনে ‘করোনা-ওয়ারিয়র’ নামে একটি গোষ্ঠীও তৈরি করেছিলেন তিনি। প্রাথমিক ভাবে ওই গোষ্ঠীর কাজ ছিল, করোনা-সংক্রান্ত ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে লড়াই করা, যাতে অহেতুক এ নিয়ে রাজ্যবাসীর মনে আতঙ্ক তৈরি না হয়। এর পর তিনি ওই স্বেচ্ছাসেবকদের পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত করে লকডাউনের বিধিনিষেধ প্রয়োগ হচ্ছে কি না তা দেখার ভার দেন। সেই সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করাও তাঁদের কাজের অঙ্গ হয়ে ওঠে।

Advertisement

আরও পড়ুন: নাকু লা-য় সংঘর্ষের আগেই লাদাখে আকাশসীমা লঙ্ঘন চিনা কপ্টারের

এর পর থেকেই বিপত্তি ঘটে বলে মনে করছেন অনেকে। পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বপক্ষে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে সরব হন বলে অভিযোগ ওঠে মনিবন্ননের বিরুদ্ধে। মনিবন্ননকে সরাতে রাজ্যের শিল্পসংস্থাগুলির একাংশ ইয়েদুরাপ্পা সরকারের কাছে তদ্বির করতে থাকে বলে অভিযোগ। কারণ, লকডাউনের ফলে শ্রম আইন শিথিল করতেও উদ্যোগী হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির একাংশ। সেই সঙ্গে তাদের অভিযোগ, মনিবন্নন নিজের দফতরের পোর্টাল ব্যবহার করে ওই শ্রমিকদের দাবিদাওয়াগুলি সরকারের কাছে পেশ করতে সাহায্য করছেন। এ নিয়ে অভিযোগ করে মনিবন্ননকে শ্রম দফতর থেকে সরাতে ইয়েদুরাপ্পা সরকারকে নাকি একটি চিঠিও দেয় বেঙ্গালুরু কর্মচারী সংগঠন। ওই চিঠিতে সংগঠনের অভিযোগ ছিল, লকডাউনের সময় মজুরি পাচ্ছেন না বলে অন্তত ৭০০ জন পরিযায়ী শ্রমিক শ্রম দফতরের পোর্টালে দাবি তুলেছেন। মনিবন্ননের উস্কানিতেই নাকি এমনটা করেছেন শ্রমিকেরা।

আরও পড়ুন: করোনা-সংক্রমণ নেই এয়ার ইন্ডিয়ার ৫ পাইলটের, দ্বিতীয় পরীক্ষা নেগেটিভ

তবে শ্রম দফতর থেকে মনিবন্ননকে সরানো হলেও ঠিক কী কারণে তাঁকে তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল, তা এখন স্পষ্ট নয়।

মনিবন্ননের বদলির নির্দেশের খবর প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এর বিরুদ্ধে অনলাইনে প্রচার শুরু করেছে কর্নাটকের নাগরিক সংগঠনগুলি। তাদের দাবি, রাজ্যে করোনা-মোকাবিলায় তাঁর অবদানের কথা মাথায় রেখে মনিবন্ননকে পুরনো পদেই রেখে দেওয়া হোক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement