প্রতীকী ছবি।
নেওয়া হচ্ছিল ১২০০ যাত্রী। রেল মন্ত্রকের নতুন নির্দেশিকা অনুসারে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত ট্রেনে এ বার থেকে ১৬০০ যাত্রী নেওয়া হবে। এক ধাক্কায় এ ভাবে ৪০০ যাত্রী বাড়ানোর ফলে করোনা পরিস্থিতিতে ট্রেনে পারস্পরিক দূরত্ব কতটা বজায় রাখা যাবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কার্যত সব আসনেই যাত্রী বহনের নীতি নেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর।
বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে প্রথম যখন শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তখন জানানো হয়েছিল, ট্রেন চালানো হবে যাবতীয় সতর্কতা মেনেই। যাত্রীদের মধ্যে সংস্পর্শ এড়াতে ট্রেনের ধারণক্ষমতার চেয়ে কম যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী ২৪ কামরার ট্রেনে ১৬০০ আসন থাকলেও গড়ে ১২০০ যাত্রী নেওয়ার কথা বলা হয়। যাত্রীদের মধ্যে যাঁদের সংক্রমণের কোনও উপসর্গ নেই, তাঁদেরই যাতায়াতের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়। ট্রেন যে-কোনও দু’টি শহরের মধ্যে চলবে এবং মাঝখানে কোথাও থামবে না। রেলের এই ব্যবস্থা মেনে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে বেশ কিছু ট্রেন চালানো হয়। সেই ট্রেনে যাত্রীদের ভাড়া মেটানো নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে।
এর মধ্যেই সোমবার রেল মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশিকা কিছুটা সংশোধন করে বলা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত স্লিপার কামরার ট্রেনে কোনও আসন খালি রাখা যাবে না। অর্থাৎ স্লিপার কামরার প্রতিটি আসন যাত্রীর জন্য বরাদ্দ থাকবে। একই নির্দেশে জানানো হয়েছে, ট্রেন যে-কোনও দু’টি শহরের মধ্যে চললেও তা মাঝপথে আরও তিনটি স্টেশনে থামতে পারবে। তবে যে-রাজ্যে ট্রেন পাঠানো হচ্ছে, তাদের আগ্রহের ভিত্তিতে স্টেশন বেছে নেওয়া হবে। রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, ট্রেন একাধিক স্টেশনে থামলে যাত্রীদের দ্রুত পরিবহণে কিছুটা সুবিধা হবে। সে-ক্ষেত্রে স্টেশনে নেমে যাত্রীদের অযথা সড়কপথে দীর্ঘ সময় যাতায়াত করতে হবে না। বেশি যাত্রী ট্রেনে তুলতে পারলে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর কাজ দ্রুত হবে বলে রেলকর্তাদের অভিমত।
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃত্যু বেড়ে হল ১১৮, নতুন করে আক্রান্ত ১২৪
আরও পড়ুন: গ্রামে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ মোদীর
এ প্রসঙ্গে রাজ্যগুলিকে লেখা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লার চিঠির কথাও উঠছে। ওই চিঠিতে রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের জানানো হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে কোনও ভাবেই রেললাইন বা জাতীয় সড়ক ধরে না-হাঁটেন, সে-দিকে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে হবে। শ্রমিকদের ফেরাতে দ্রুত ট্রেনের ব্যবস্থা করার জন্য রাজ্যগুলির সহযোগিতা চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের উদ্বেগের কথাও জানানো হয়েছে। রেলের বক্তব্য, ট্রেনে ওঠা ও নামার সময় নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ থাকছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিরও দায়িত্ব থাকছে। তাই যাত্রী বাড়লেও তা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। রেলের একাংশের মতে, আসন ফাঁকা রেখে ক্ষতির বহর না-বাড়ানোর পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিকদের দ্রুত ফেরানোর কাজ সম্পূর্ণ করতেই নির্দেশিকায় এই গুরুত্বপূর্ণ বদল আনা হয়েছে। রেলের বেহাল আর্থিক দশার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন কর্তারা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)