—ফাইল চিত্র।
শুধু প্রতিষেধক নিলেই হবে না। মেনে চলতে হবে দূরত্ব বিধিও। তবেই ঠেকানো সম্ভব করানোভাইরাসকে। দেশে নতুন করে যে ভাবে কোভিডের প্রকোপ দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এ ভাবেই সকলকে সাবধান করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়ে দিলেন, করোনার প্রকোপ ঠেকাতে চাইলে দুই বিষয়েই সতর্ক হতে হবে।
দেশে নতুন গতিতে যে ভাবে কোভিড সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাতে নতুন করে মহামারির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতেই ‘মন কি বাত’-এ দেশবাসীকে সাবধান হওয়ার বার্তা দেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের বৃহত্তম টিকাকরণ প্রক্রিয়া চলছে দেশে। উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে ১০৯ বছরের এক মহিলা প্রতিষেধক নিয়েছেন। ১০৭ বছরের এক মহিলা প্রতিষেধক নিয়েছেন দিল্লিতে। আমাদের বুঝতে হবে যে, ওষুধ যেমন প্রয়োজনীয়, তেমনই জরুরি বিধি নিষেধ মেনে চলাও।’’
করোনার বিরুদ্ধে লড়াই ভারত গোটা বিশ্বকে পথ দেখিয়েছে বলেও রবিবার মন্তব্য করেন মোদী। বলেন, ‘‘গত বছর মার্চে জনতা কার্ফু-র ডাক দিয়েছিলাম আমরা। গোটা বিশ্বের সামেন উদাহরণ তৈরি করেছিলাম। ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এই জনতা কার্ফু মনে রাখবে, বুঝতে পারবে, থালা-বাসন বাসিয়ে করোনা-যোদ্ধাদের উৎসাহ জুগিয়েছিলেন দেশবাসী।’’ অতিমারিতে করোনাযোদ্ধারা যে ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করে গিয়েছেন, তার জন্য তাঁদের কুর্নিশও জানান মোদী।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ধীরে ধীরে থাবা বসাচ্ছে দেশে। কেন্দ্রীয় সরকারি নথি বলছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬২ হাজার ৭১৪ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। গত অক্টোবর মাস থেকে করোনা আক্রন্তের দৈনিক বৃদ্ধির সংখ্যায় যা সর্বোচ্চ। এই বৃদ্ধির ফলে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ১ কোটি ১৯ লক্ষতে। গত অক্টোবরের ১৬ তারিখে শেষ বার দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৩ হাজারের বেশি। মার্চের শেষে প্রায় সেই সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলল সংক্রমণ।
শ়েষ পাওয়া সরকারি তথ্য বলছে, ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩১২ জনের। ২০২১ সালে প্রথমবার করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩১২ তে গিয়ে দাঁড়াল। শুধু তাই নয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের দৈনিক মৃতের সংখ্যায় এতটা বৃদ্ধি দেখা যায়নি।
মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব তো সমক্রমণ বৃদ্ধির তালিকাতেই ছিল। ভোট মরসুমে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা এসে পৌঁছল পশ্চিমবঙ্গেও। দেশের যে ৪৬টি জেলার পরিস্থিতি নরেন্দ্র মোদী সরকারের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনাও।ভোট চলাকালীন রাজ্যে সংক্রমণের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে ধরে নিয়ে আগামী এক-দেড় মাসের জন্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ার প্রশ্নে পরিকাঠামোগত সমস্ত ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
এই আবহে রবিবার প্রধানমন্ত্রী মোদী যা বললেন, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, শুধু প্রতিষেধক নেওয়াই নয়, করোনা সংক্রান্ত বাকি নিয়মবিধি পালনই কিছুটা হলেও ঠেকাতে পারে সংক্রমণ। মোদীর বার্তা তা নিয়েই।