Coronavirus in India

চিনা উপরূপে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র! করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

করোনাভাইরাসের যে উপরূপ চিনে নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তার খোঁজ মিলেছে ভারতেও। ইতিমধ্যে ৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের ওই নতুন উপরূপের খোঁজ মিলেছে। ভাইরাসটির নাম ওমিক্রন বিএফ.৭।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:৩২
Share:

দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক। ফাইল চিত্র।

দু’বছর আগে করোনার দ্বিতীয় স্ফীতির গোড়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল ভূরি ভূরি। এ বার চিনে করোনাভাইরাসের নতুন উপরূপ ওমিক্রন বিএফ.৭-এর বাড়বাড়ন্ত দেখে দ্রুত তৎপর হল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ভারতেও যাতে সংক্রমণের পুরনো ছবি আর ফিরে না আসে, তা নিশ্চিত করতে বুধবার বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ, নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বি কে পল-সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বৈঠকে হাজির থাকবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদী।

Advertisement

করোনাভাইরাসের নয়া চিনা উপরূপের ইতিমধ্যেই খোঁজ মিলেছে ভারতে। ওড়িশা এবং মোদীর রাজ্য গুজরাতে মোট ৪ জনের দেহে ওমিক্রন বিএফ.৭-এর খোঁজ মিলেছে। ওমিক্রনের আগের রূপের মতোই এটিও তীব্র সংক্রামক বলে প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পর্যালোচনা বৈঠকে মূলত বুস্টার টিকাকরণে জোর দেওয়া হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ দু’টি টিকা নিলেও এখনও পর্যন্ত তৃতীয় টিকা বা বুস্টার নিয়েছেন মাত্র ২৭ শতাংশ।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশের মতে, করোনার সংক্রমণ সত্ত্বেও মৃত্যুহার কমে আসায় মানুষের ভয় ভেঙে গিয়েছে। সেটাই বুস্টার নেওয়ায় অনীহার কারণ। কিন্তু চিনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুও বাড়ছে বলেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি। সংক্রমণ বাড়ছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো এশিয়ার অন্যান্য দেশেও। এই আবহে বুধবার বৈঠকের শেষে দেশবাসীকে দ্রুত বুস্টার নেওয়ার আবেদন জানিয়ে বিকে পল বলেন, ‘‘বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিক, যাঁদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি— তাঁদের অবশ্যই বুস্টার নিয়ে ফেলা উচিত।’’

Advertisement

ভারতে ওমিক্রন বিএফ.৭-এর প্রথম আক্রান্তের খোঁজ মেলে অক্টোবর মাসে। গুজরাতের বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টারে ধরা পড়ে ওই উপরূপ। এর পরে মোদীর রাজ্যেই আরও এক আক্রান্তের সন্ধান মেলে। এ ছাড়া, ওড়িশায় ২ জনের দেহে মেলে করোনার নতুন উপরূপের হদিস। যদিও ওই ৪ জনেই বর্তমানে সুস্থ। কিন্তু ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, পরিস্থিতি মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন, বর্তমান কোভিড টিকাগুলি নয়া উপরূপ ঠেকাতে কতটা কার্যকরী। পাশাপাশি, আবার মাস্ক বাধ্যতামূলক করা এবং করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

পাশাপাশি, করোনাভাইরাসের নয়া উপরূপের মোকাবিলায় বুস্টার টিকা বাধ্যতামূলক করার দাবিও উঠছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে সরকারি নির্দেশিকা জারি করে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে অতীতের মতোই বুস্টার টিকা ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা সরকারি দফতরে ‘প্রবেশ নিষেধ’ কিংবা বিমানে চড়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারির পথে হাঁটা হবে কি না, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বৈঠকে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর। অতিমারির অভিঘাত কাটিয়ে দীর্ঘ দিন পরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতি। করোনার জন্য নতুন করে আর্থিক বৃদ্ধির ছন্দপতন যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করাই এখন মোদী সরকারের ‘পাখির চোখ’।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement