— ছবি সংগৃহীত
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় অনাথ হয়ে যাওয়া হাজার হাজার শিশু, বয়স্ক নাগরিক ও অনগ্রসর শ্রেণির মতো সঙ্কটাপন্ন গোষ্ঠীর দিকে রাজ্যগুলিকে বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অভিভাবকহীন ওই সব শিশু যাতে পাচারের শিকার না হয়, সে নিয়ে রাজ্যগুলিকে বিশেষ সতর্ক থাকার জন্য শুক্রবার এক বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র।
কেন্দ্র জানিয়েছে, তাদের অন্যতম চিন্তা মহিলা, শিশু, বয়স্ক নাগরিক, তফসিলি জাতি ও জনজাতির মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। পাচার বা অন্যান্য অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের হাত থেকে তাদের বাঁচাতে প্রশাসনিক স্তরে তৎপরতা বাড়ানো। কোভিডে অভিভাবকহীন শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিমধ্যেই আশঙ্কা প্রকাশ করছে শিশু-অধিকার রক্ষা সংগঠনগুলি। এই শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীও।
সঙ্কটাপন্ন এই গোষ্ঠীর জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তা আজ ওই নির্দেশিকায় জানতে চেয়েছে কেন্দ্র। বিশেষত, যে সব শিশুরা অভিভাবকহীন, যে সব বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চিকিৎসা ও সুরক্ষা প্রয়োজন এবং তফসিলি জাতি ও জনজাতির যে সব মানুষের সরকারি সাহায্যের নাগাল পেতে অক্ষম, তাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রত্যেক থানায় মহিলাদের জন্য ‘হেল্প-ডেস্ক’ ও জেলায় জেলায় পাচার বিরোধী সংগঠন গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
করোনার সম্ভাব্য তৃতীয় ঢেউয়ের হাত থেকে শিশুদের রক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছে মুম্বই। শহরের পুর কমিশনার ইকবাল সিংহ চাঁচল জানিয়েছেন, কোভিড আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসার জন্য শহরে চারটি বিরাট কোভিড-কেয়ার ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। একটি টাস্ক ফোর্স তৈরি করে সেখানে রাখা হচ্ছে শহরের সেরা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের।
ইকবালের কথায়, ‘‘২ বছরের একটি শিশুর উপসর্গ দেখা গেলে তাকে কী ভাবে মায়ের কাছ থেকে আলাদা করে হাসপাতালে রাখা হবে? আমরা সেই ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের ভাইরাসের চেয়েও দ্রুত এগোতে হবে।’’
কোভিড মোকাবিলায় বিভিন্ন রাজ্যের নেওয়া অভিনব উদ্যোগের প্রশংসা করে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যেখানে, কেরলের হাসপাতালে ‘অক্সিজ়েন নার্স’ নিয়োগ, তামিনলাড়ুর ‘ট্যাক্সি-অ্যাম্বুল্যান্স’ বা রাজস্থানের ‘মোবাইস ওপিডি’র মতো আরও ১২টি পরিষেবার প্রশংসা করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২ লক্ষ ৫৯ হাজার মানুষ নতুন করে করোনা-আক্রান্ত হয়েছে বলে আজ জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যার ফলে টানা তিন দিন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লক্ষের নীচে থাকল। দিল্লিতে গত ৪ এপ্রিলের পরে এই প্রথম পজ়িটিভিটির হার ৫ শতাংশের নীচে নামল।