ফাইল চিত্র।
কোভিড মোকাবিলায় চল্লিশটিরও বেশি দেশের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছে ভারত। ইউরোপের বিভিন্ন বড় রাষ্ট্র এবং আমেরিকা, রাশিয়া, জার্মানির পাশাপাশি সাহায্যকারী দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, গায়না, মরিশাসের মতো অপেক্ষাকৃত ছোট দেশগুলিও। আজ কোভিডের সঙ্গে যুঝতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সরকারের সঙ্গে চুক্তির পাশাপাশি অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর এবং ওষুধ আমদানি করা হচ্ছে বিভিন্ন স্তরেও। অন্যান্য দেশের বাণিজ্যিক সংস্থাগুলি থেকেও সরাসরি অক্সিজেন এবং ওষুধ আনাচ্ছে ভারতীয় বেসরকারি সংস্থাগুলি। সে ক্ষেত্রে গোটা প্রক্রিয়াটি যাতে দ্রুত করা হয়, সে কারণে বিভিন্ন রাষ্ট্রের ভারতীয় দূতবাসকে জরুরি ভিত্তিতে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় পণ্য কেন্দ্রের কাছে আসার পর সে গুলি কী ভাবে অতি দ্রুত রাজ্যগুলিতে (যে সব জায়গায় সঙ্কট সবচেয়ে বেশি) পৌঁছে দেওয়া যায়, তার জন্য গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রকের একটি সমন্বয় কমিটি। তাতে রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক, অর্থ, প্রতিরক্ষা, বিমান মন্ত্রক এবং জৈব প্রযুক্তির বিশেষজ্ঞেরা। সমস্ত পণ্যের উপর থেকে কর মকুব করে সেগুলি যাতে সরাসরি সঙ্কটজনক এলাকায় সরাসরি পাঠানো যায়, তার জন্য আপৎকালীন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদেশসচিব।
শ্রিংলার কথায়, “ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর-সহ আরও কিছু পণ্য বোঝাই ব্রিটেনের একটি বিমান ২৭ তারিখ পৌঁছে গিয়েছে। গতকাল রাতে রাশিয়ার দু’টো বিমান এসেছে ২০টি অক্সিজেন প্ল্যান্ট নিয়ে। সঙ্গে ভেন্টিলেটর এবং অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ। আগামিকাল থেকে দু’দিনের মধ্যে আমেরিকার মোট তিনটি বিমান আসছে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন রসদ নিয়ে।“ বিদেশ সচিব জানিয়েছেন, করোনা চিকিৎসায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ওষুধ রেমডেসিভির আমদানির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ভারতে এই ওষুধের উৎপাদন দিন প্রতি গড়ে সাতষট্টি হাজার বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশে তার চাহিদা প্রতিদিন প্রায় আড়াই কোটি। জোগানের ক্ষেত্রে এই বিপুল ঘাটতি পূরণ করতে আমেরিকার গিলিয়ার্ড সংস্থা (ওষুধটির পেটেন্ট যাদের)-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নয়াদিল্লি। তারা এই মুহূর্তে ভারতের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কাজ শুরু করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি মিশরের একটি সংস্থার (এই ওষুধটির পাইকারি বিক্রেতা) সঙ্গে কথা হয়েছে ভারতের। সেখান থেকেও ইতিবাচক আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির কাছ থেকেও রেমডেসিভির পাওয়া যাবে বলে জানান শ্রিংলা।
অন্য দিকে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় ঢাকা ভারতকে জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দশ হাজার অ্যান্টি ভাইরাল ইঞ্জেকশন, ওষুধ, ৩০ হাজার পিপিই এবং কয়েক হাজার জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি।