ফাইল চিত্র।
দিল্লি-সহ কয়েকটি রাজ্যে মৃতের সংখ্যা নিয়ে গরমিলের অভিযোগ উঠছে। প্রশ্ন উঠছে, মৃতের সংখ্যা গোপন করার চেষ্টা চলছে না তো? ‘‘মৃতের সংখ্যা নিয়ে হইচই করলে তো আর মৃতেরা ফিরে আসবেন না, তাই ওই বিষয়ে বিতর্কের কোনও প্রয়োজন নেই’’, বলে আজ কোনও মতে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর।
বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ শাসিত হরিয়ানাতে কোভিড পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগজনক। অভিযোগ উঠছে, কোভিড আক্রান্তের মৃত্যু-সংখ্যার সঙ্গে সরকারি পরিসংখ্যানের বিস্তর ফারাক। আজ এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে খট্টর বলেন, ‘‘আমরা ভয়ঙ্কর সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এখন পরিসংখ্যান নিয়ে বিতর্কের সময় নয়। মানুষকে সুস্থ করে তোলাই জরুরি। যাঁরা মারা গিয়েছেন, চিৎকার করলেও তাঁরা ফিরে আসবেন না। …পাঁচ-দশটা এ দিক-ও দিক হল, তা নিয়ে বিবাদ করে লাভ নেই।’’
শ্মশান ও করবস্থানে যত করোনা রোগীর অন্ত্যেষ্টি হচ্ছে, তার সঙ্গে দিল্লি সরকারের দেওয়া মৃত্যুর হিসেবের অনেক পার্থক্য। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দিল্লি পুরসভার অধীনস্থ শ্মশান ও কবরস্থান থেকে শেষকৃত্য হওয়া কোভিড মৃতদের তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, দিল্লি সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৯৩৮ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু দিল্লি পুরসভার ২৬টি শ্মশান ও কবরস্থানে শেষকৃত্য হয়েছে ৩০৯৬ জন কোভিড আক্রান্তের। অর্থাৎ, দিল্লি সরকারের প্রকাশিত তথ্যে ১১৫৮ জন মৃতের কোনও উল্লেখ নেই। এ ব্যাপারে অরবিন্দ কেজরীবাল প্রশাসন এখনও কোনও মন্তব্য করেনি।
গাজ়িপুর শ্মশানের কর্মী অনুজ বনসলের কথায়, ‘‘কোভিডের জন্য মৃত্যু না অন্য কারণে— সৎকারের আগে তা লিখে রাখতে হচ্ছে। মৃতেরা হাসপাতাল থেকে বা অ্যাম্বুল্যান্সে এলে জানতে পারছি। কিন্তু বাড়ি থেকে মৃতদেহ এলে কোভিডের কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত ভাবে জানতে পারছি না। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ হিসেবে আমাদের খাতায় কোভিডের উল্লেখ থাকছে না।’’
দিল্লি প্রশাসনের একাংশের মতে, মোদী-অমিতদের নাকের ডগায় থাকা দিল্লিতে কোভিড-মৃতের পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহেই মোদী সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলবে। সম্প্রতি লখনউয়েও করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর সংখ্যায় গরমিলের অভিযোগ ওঠে।