প্রতীকী ছবি।
বিরোধীদের মতে, লকডাউনে অর্থনীতি থমকালেও করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া থমকায়নি। সেই আক্রমণের জবাবে আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রের দাবি, লকডাউন না হলে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ২৯ লক্ষ লোকের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। মারা যেতে পারতেন ৭১ হাজার মানুষ। সেখানে লকডাউনের ফলে সংক্রমিত হয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ, মারা গিয়েছেন প্রায় ৩৫০০ জন।
আজ নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বি কে পল পরিসংখ্যান তুলে ধরে ওই দাবি করলেও তাঁর দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধীদের মতে, মাসখানেক আগে নীতি আয়োগের একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে পল দাবি করেছিলেন, ১৬ মে-এর পরে দেশে করোনা সংক্রমণ শূন্য হয়ে যাবে। এখন দেখা যাচ্ছে, গত সাত দিনে সংক্রমণ আরও বেড়েছে! যদিও পল আজ ওই দাবির কথা অস্বীকার করেছেন। গত চব্বিশ ঘণ্টায় দেশে প্রায় ৬,০৮৮ হাজার নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এই প্রথম দেশে এক দিনে নতুন সংক্রমণের গণ্ডি ছয় হাজার পেরলো। ফলে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১,১৮,৪৪৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ১৪৮ জন। সব মিলিয়ে করোনায় মৃত্যু হল ৩,৫৮৩ জনের। সংক্রমণের প্রশ্নে এখনও শীর্ষে মহারাষ্ট্র। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সংক্রমণের নিরিখে ৯০ শতাংশ নতুন সংক্রমণের তথ্য আসছে দশটি রাজ্য থেকে। তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। আবার নতুন আক্রান্তদের ৭০ শতাংশই ১০টি বড় শহরের বাসিন্দা। সেই তালিকায় রয়েছে কলকাতা। আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, প্রথমে শহরগুলির চিহ্নিতকরণ ও পরবর্তী ধাপে এলাকা ধরে ধরে সংক্রমণ রোখার পরিকল্পনা আছে।
আজ বিরোধী দলগুলির বৈঠকেও লকডাউনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, কংগ্রেসের রাহুল গাঁধীর মতো নেতাদের মতে, লকডাউন দেশের অর্থনীতিকে কার্যত ধ্বংস করে দিলেও সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁদের মতে, ফি দিন ৫-৬ হাজার লোক সংক্রমিত হওয়ায় প্রমাণ হচ্ছে, লকডাউন শিথিল করতেই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সম্পূর্ণ লকডাউন উঠে গেলে সংক্রমণ ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়বে।
অন্য দিকে বি কে পলের দাবি, লকডাউনের আগে সংক্রমণের হার ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। এখন তা তিন শতাংশের কিছু বেশি। লকডাউনের আগে প্রতি সাড়ে তিন দিনে দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল। এখন সাড়ে তেরো দিনে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। রাশিবিজ্ঞান দফতরের প্রতিনিধি প্রবীণ শ্রীবাস্তবের দাবি, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যৌথ ভাবে এ বিষয়ে কাজ করে দেখা গিয়েছে, লকডাউনের ফলে প্রায় ২০ লক্ষ নতুন সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে।