সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই করোনাকে হারানোর চাবিকাঠি বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ছবি: পিটিআই।
শুধু টিকা নিলে চলবে না। মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাও সমান জরুরি। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এমনই পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা। এ বার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর গবেষণায় আরও ভয়ঙ্কর তথ্য উঠে এল। দেখা গিয়েছে, সঠিক ভাবে সামাজিক দূরত্ব বিধি না মেনে চললে, এক জন করোনা রোগীর থেকে এক মাসের মধ্যে ৪০৬ জন সংক্রমিত হতে পারেন। তাই করোনাকে ঠেকানোর জন্য সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা এবং লকডাউনের কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দেশে দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যু যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে বার বার সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার উপর জোর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার এ নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব অগরওয়াল। সেখানে তিনিই আইএমআর-এর গবেষণার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘‘ছ’ফুট দূরত্ব থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকাকালীনও এমনটা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মাস্ক না পরলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা ৯০ শতাংশ। এক জন সুস্থ মানুষ যদি মাস্ক পরেন, আর সংক্রমিত ব্যক্তি যদি মাস্ক না পরেন, সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা ৩০ শতাংশ। দু’জনেই মাস্ক পরলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা মাত্র ১.৫ শতাংশ।’’
নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্য ভিকে পাল বলেন, ‘‘সামাজিক দূরত্ববিধি যদি ৫০ শতাংশও মেনে চলা হয়, করোনা রোগীর থেকে মাত্র ১৫ জন সংক্রমিত হতে পারেন। দূরত্ববিধি যদি ৭৫ শতাংশ মেনে চলা হয়, সে ক্ষেত্রে এক জন রোগীর থেকে মাত্র আড়াই জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই সকলকে অনুরোধ করছি, প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোবেন না। বাড়িতেও মাস্ক পরুন। এই সময় কাউকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাবেন না। মনে রাখবেন করোনাকে হারানোর একটাই উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মাস্ক এবং পরিচ্ছন্নতা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।’’
অযথা হাসপাতালে ভিড় করা নিয়েও সতর্ক করেন লব। তাঁর যুক্তি, আতঙ্কেই অনেকে হাসপাতালে ছুটছেন। রোগী ভর্তির ক্ষেত্রে হাসপাতলগুলির উচিত চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া, যে কাকে ভর্তি করা উচিত, আর কাকে নয়।