প্রতীকী ছবি।
প্রতিষেধক তুমি কার!
বিজেপিকে ভরসা করেন না বলে কোভিডের প্রতিষেধক তিনি নেবেন না বলে বিতর্কে জড়ালেন সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব। অন্য দিকে কেন স্বদেশি প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিনের পরিবর্তে ব্রিটিশ প্রতিষেধক কোভিশিল্ডকে আগে ছাড়পত্র দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সব মিলিয়ে প্রতিষেধক চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়ার আগেই তা নিয়ে রাজনীতি শুরু করে দিলেন রাজনীতিকেরা।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়ে দিয়েছেন, চলতি মাসে মকর সংক্রান্তির পরেই তাঁর রাজ্য-সহ গোটা দেশে টিকাকরণ অভিযান শুরু হয়ে যাবে। সাধারণত সংক্রান্তি না যাওয়া পর্যন্ত শুভ কাজে হাত দিতে নিমরাজি থাকেন বিজেপি নেতারা। এ ক্ষেত্রেও সম্ভবত সেই সূত্র মেনেই আদিত্যনাথ জানিয়েছেন, সংক্রান্তির পরেই তাই টিকাকরণের মতো শুভ কাজ শুরু করা হবে। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সেই ‘শুভ কাজে’ মোটেই ভরসা রাখতে পারছেন না সেই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। বিজেপিকে অবিশ্বাস করার কারণে তিনি বিজেপি সরকারের উদ্যোগে দেওয়া কোভিডের প্রতিষেধক নেবেন না বলে বির্তকে জড়িয়েছেন তিনি। অখিলেশের কথায়, ‘‘আমি বিজেপিকে ভরসা করি না। তাই ওদের দেওয়া টিকা নেব না। আমরা ক্ষমতায় এলে প্রত্যেকের জন্য বিনামূল্যে প্রতিষেধক নিশ্চিত করব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘করোনার নাম করে মানুষের থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। যখনই বিরোধীরা আক্রমণ করছে, তখনই এই সরকার করোনা নিয়ে উদ্বেগ দেখাচ্ছে। অথচ এই একই সরকার কিছু দিন আগে হাততালি দিয়ে আর থালা বাজিয়ে করোনা তাড়াতে চেয়েছিল।’’ অখিলেশের মন্তব্যের সমালোচনা করে উত্তরপ্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য বলেন, ‘‘অখিলেশ প্রতিষেধকে ভরসা করেন না আর উত্তরপ্রদেশের মানুষ অখিলেশকে ভরসা করেন না। টিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ, দেশের ডাক্তার ও বিজ্ঞানীদের অপমান করা। অখিলেশকে এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।’’
বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী উস্কে দিয়েছেব স্বদেশি-বিদেশি বিতর্ক। গত কাল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড টিকার ছাড়পত্র দেয় কেন্দ্র। বর্তমানে ভারতে ওই টিকার তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ ১৬০০ ব্যক্তির উপরে চালু রয়েছে। তা সত্ত্বেও ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োগের ফলাফলের ভিত্তিতে ওই বিদেশি প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। অন্য দিকে দেশীয় প্রতিষেধক ভারত বায়োটেক তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এ দেশে প্রায় ৩২ হাজার স্বেচ্ছাসেবকর উপরে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্বামী বলেন, “শুনে খুব অবাক হলাম যে, মতো স্বদেশি সংস্থা ইতিমধ্যেই ১৩ হাজার ব্যক্তির উপরে তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছে। কিন্তু ইংরেজদের প্রতিষেধক সেখানে মাত্র ১২০০ ব্যক্তির উপরে প্রয়োগ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও ইংরেজ (প্রতিষেধক) ছাড়পত্র পেয়েছে কিন্তু স্বদেশি টিকা ছুড়ে ফেলা হল!“ ঘটনাচক্রে আজ সন্ধ্যায় স্বামীর ওই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই ছাড়পত্র পায় ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। প্রতিষেধক সংক্রান্ত বিজ্ঞান নিয়ে রাজনীতিকদের আলটপকা মন্তব্যের মধ্যে ব্যতিক্রম জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের টিকা কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নয়। আর কে কী করবে জানি না, তবে আমার পালা এলে আমি তো উৎসাহের সঙ্গে টিকা নেব।’’