ছবি: রয়টার্স।
এক ধাক্কায় ৭০% দাম বাড়া মুখের কথা নয় যে কোনও পণ্যের ক্ষেত্রেই। কিন্তু দেশের জন্য এটুকু ‘ত্যাগ’ করতে জান কবুল রাজধানীর মদিরাপ্রেমীরা।
দীর্ঘ লাইন জয় করে, হাজার টাকার বোতল সতেরোশো টাকায় কিনে যে ভাবে দোকান থেকে বেরোচ্ছেন, যেন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হাতের মুঠোয়! উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব দিল্লির যে সব জায়গায় মদের দোকান খোলা রয়েছে, সর্বত্র হুবহু একই দৃশ্য আজ।
গত কালই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কন্টেনমেন্ট এরিয়ার বাইরে মদের দোকান খুলবে ঠিকই কিন্তু স্পেশাল করোনা ফি হিসেবে দিতে হবে ৭০% বেশি দাম। সকাল ন’টা থেকে সন্ধে সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত খোলা থাকবে দেড়শোটি নথিভুক্ত দোকান। কিন্তু দেখা গেল, সকাল ন’টায় এসে দোকানের এক মাইল দূরে দাঁড়ানোর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না অনেকেই। পূর্ব দিল্লির লক্ষ্মীনগর এলাকার মদের দোকানটির সামনে তাই শেষ রাত থেকে ভিড় জমতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: তামিলনাড়ুর সংক্রমণের কেন্দ্র এই বাজার আবার ফিরল রেড জোনে
আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে নজর রাখছেন ৬০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী, ফেসবুকে হিসাব দিলেন মমতা
প্রবীণ খন্না নামক এক স্থানীয় বাসিন্দা যেমন এসেছেন ভোর ছ’টায়। তাঁর অভিযোগ, ভোর থেকে ভিড় সামলানো উচিত ছিল পুলিশের। তখনই এসে টোকেনের মতো করে নম্বর নিয়ে নেওয়া উচিত ছিল। তা হলে সুষ্ঠু ভাবে সবাই এক-এক করে পেতেন। ক্ষোভে ফেটে পড়ে তিনি বলেছেন, “আমি এসেছি পৌনে ছটায়। আমার অনেক বন্ধু এসেছে ভোর চারটেয়। কিন্তু দেখুন পুলিশ পৌঁছচ্ছে দোকান খোলার পাঁচ মিনিট আগে। কোনও ব্যবস্থা নেই, মানুষকে বোঝাবে কে? যদি লড়াই-ঝগড়া হয়, তা হলে কে দায়িত্ব নেবে?” সেই সঙ্গে প্রায় বুক ঠুকেই বললেন, “মদের ৭০% দাম বেড়েছে বলে কোনও দুঃখ নেই। দেশের জন্য এটুকু দান করতে আমরা প্রস্তুত।’’
গত কালও সকালে দোকান খোলার আগে থেকে অধিকাংশ মদের দোকানের সামনে লম্বা লাইন ছিল। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে। ফলে খুলেও বন্ধ করে দিতে হয় অধিকাংশ মদের দোকান। তখন রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে, মদে আরও কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, দোকানের সামনে উন্মত্ত ভিড় কিছুটা কমানোর কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। পাশাপাশি রাজ্যের শুকিয়ে আসা কোষাগারে কিছু বাড়তি আমদানির কথাও ভাবা হয়েছে। কিন্তু আজ দিনশেষে মদের দোকানের সামনে ভিড় কমার লক্ষণ তো দেখা যায়ইনি, বরং সংক্রমণের তোয়াক্কা না করেই দোকানের সামনে সবাই ব্যাগ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)