গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে যখন অক্সিজেন এবং ফ্লু প্রতিরোধী ওষুধের আকাল, সেই সময় বিপুল পরিমাণ ‘ফ্যাবিফ্লু’ ওষুধ মজুত করা নিয়ে বিপাকে বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার গৌতম গম্ভীর। গোটা ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত প্রশ্ন তুলেছে, এই বিপুল পরিমাণ ওষুধ মজুত রাখার অনুমতি কোত্থেকে পেলেন গৌতম? তাঁর কাছে ওষুধ মজুত রাখার লাইসেন্স রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে আদালত।
সম্প্রতি নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র পূর্ব দিল্লিতে বিনামূল্যে ফ্লু প্রতিরোধী ‘ফ্যাবিফ্লু’ ওষুধ বিতরণের কথা ঘোষণা করেন গৌতম। করোনার মৃদু উপসর্গ থাকলে রোগীকে ওই ওষুধ দেওয়া হয়। নেটমাধ্যমে গৌতম জানান, আধার কার্ড এবং প্রেসক্রিপশন নিয়ে এলে তাঁর দফতর থেকে বিনামূল্যে ওই ওষুধ পাবেন পূর্ব দিল্লির বাসিন্দারা।
গৌতমের এই ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিতে সময় লাগেনি। অভিযোগ ওঠে, গোটা দিল্লি যখন করোনার প্রকোপে ধুঁকছে, অক্সিজেন এবং ওষুধের জোগানে ঘাটতির অভিযোগ উঠে আসছে সব জায়গা থেকে, সেই সময় শুধুমাত্র নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের জন্য বেআইনি ভাবে বাজার থেকে ‘ফ্যাবিফ্লু’ তুলে নিয়ে মজুত করে রেখেছেন গৌতম। তিনি বাজার থেকে ওষুধ তুলে নেওয়ায় ‘ফ্যাবিফ্লু’-র এক একটি ট্যাবলেটের দাম, যা এত দিন ৭৫-১০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করত, তা একলাফে ৪০০-৪৫০ টাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও অভিযোগ সামনে আসে।
এমন পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে দিল্লি হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। বুধবার বিচারপতি বিপিন সঙ্ঘী এবং রেখা পাল্লির এজলাসে সেটির শুনানি চলাকালীন আদালত প্রশ্ন তোলে, ‘‘এই ওষুধ প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে তো কিনতে হয়, নাকি? তা হলে এই বিপুল পরিমাণ ওষুধ কী ভাবে মজুত করা হল? ওঁর কাছে কি ওষুধ মজুত রাখার লাইসেন্স রয়েছে? ওষুধ মজুত করতে কি লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়ে না? শুরুতেই তো বিষয়টি আটকে দেওয়া উচিত ছিল। অথচ এখনও কিছু করা গেল না।’’
বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকারের পক্ষে সওয়াল করছিলেন আইনজীবী রাহুল মেহরা। তিনি বলেন, ‘‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার ছবি ধরা পড়ছে।’’ তবে গৌতম ওই বিপুল পরিমাণ ওষুধ কোত্থেকে জোগাড় করলেন, এখনও পর্যন্ত তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।