গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৯৭ হাজারের বেশি। ফাইল চিত্র।
দেশে এক দিনে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা এক লক্ষ ছুঁতে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা! আজ নিয়ে পরপর তিন দিন দৈনিক করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ হাজারের গণ্ডি পেরিয়ে গেল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৯৭ হাজারের বেশি।
ব্রিটেনে থমকে যাওয়া পরীক্ষা ফের শুরু হতেই সিরাম ইনস্টিটিউট আজ জানিয়ে দিয়েছে, অনুমতি মিললেই ভারতে মানবদেহে কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের পরীক্ষা শুরু করতে তারা প্রস্তুত। তবে এখনও অবশ্য ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)-র কাছ থেকে সেই ছাড়পত্র তারা পায়নি।
এক জন স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়ায় মানবদেহে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি ‘কোভিশিল্ড’-এর তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছিল ব্রিটেনে। কিন্তু ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সে বিষয়ে না-জানিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করায় সিরামকে বুধবার শো-কজ় করে ডিসিজিআই। জবাবে সিরাম জানিয়েছে, ভারতে কোভিশিল্ডের পরীক্ষার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সুরক্ষা বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও সমস্যা নেই। ডেটা সেফটি মনিটরিং বোর্ডের সুপারিশে এর পরেও অবশ্য সিরামকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ বন্ধ রাখতে হয়েছে। ব্রিটেনে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফের পরীক্ষা শুরু করায় সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা টুইট করেছেন, তাঁরা প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: ফের ট্রায়াল চালু করল অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্র্যাজেনেকা
গত কালের মতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজও বলেছেন, করোনার প্রতিষেধক না-আসা ইস্তক সংক্রমণ নিয়ে ঢিলেঢালা মনোভাব দেখানো চলবে না। যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে চলতেই হবে। তাঁর কথায়, ‘‘যব তক দাওয়াই নেহি, তব তক ঢিলাই নেহি। দো গজ কি দূরি, মাস্ক হ্যায় জ়রুরি।’’
আন্তর্জাতিক সমীক্ষক ওয়ার্ল্ডোমিটার্স অনুযায়ী দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যাটা এখন ৪৭,৫১,৭৮৮। যদিও সুস্থতার হারকেই বড় করে দেখাতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তারা আজও জানিয়েছে, ৭৭.৭৭ শতাংশ রোগীই সুস্থ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার এক টুইটে দাবি করেছিলেন, করোনা অজানা চ্যালেঞ্জ হলেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ‘সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা’ অনুযায়ী ভারত সফল ভাবে এর বিরুদ্ধে লড়ছে।’’
দেশে আক্রান্ত ৪৭,৫১,৭৮৮
সূত্র: ওয়ার্ল্ডোমিটার্স
শনিবারের করোনা বুলেটিন।
সূত্র: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক
৪৬,৫৯,৯৮৪
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৯৭,৫৭০
মৃত ৭৭,৪৭২
২৪ ঘণ্টায় মৃত ১২০১
সুস্থ ৩৬,২৪,১৯৬
২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ৮১,৫৩৩
অ্যাক্টিভ রোগী ৯,৫৮,৩১৬
বিরোধীরা তা মানতে রাজি নয়। কারণ পরিসংখ্যান বলছে, গত ৭ অগস্ট আক্রান্তের সংখ্যাটা ২০ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়েছিল। ২৩ অগস্ট যা পৌঁছোয় ৩০ লক্ষে এবং ৫ সেপ্টেম্বর ৪০ লক্ষে। আর এখন আক্রান্তের সংখ্যাটা ৪৬,৫৯,৯৮৪। অর্থাৎ সংক্রমণের গতি ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। মহারাষ্ট্রে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়েছে আজ।
অতিমারির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শিল্প-অর্থনীতির ক্ষতিও। যার উল্লেখ করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী আজ টুইট করেছেন, ‘‘মোদী সরকারের এই সুপরিকল্পিত লড়াই ভারতকে রসাতলে ঠেলে দিয়েছে। দেশের জিডিপি নজিরবিহীন ভাবে ২৪ শতাংশ কমেছে। ১২ কোটি কর্মহীন হয়েছেন। ১৫.৫ লক্ষ কোটি টাকা ঋণের বোঝা বেড়েছে। এবং দৈনিক আক্রান্ত ও মৃতের নিরিখে প্রায় শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছে ভারত। এর পরেও সরকার ও দেশের সংবাদমাধ্যমের চোখে ‘সব চাঙ্গা সি’ (সব ঠিক আছে)।’’
১৭০ দিন বন্ধ থাকার পরে আজ থেকে পুরোপুরি চালু হয়েছে দিল্লি মেট্রো। করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র এ দিন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বি কে পল, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা ও অন্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।