করোনা নিয়ে আত্মতুষ্টি চেপে বসলে, তার পরিণতি বিপজ্জনক হতে পারে। মত সিএসআইআর-এর। ছবি: পিটিআই।
দেশের করোনা-সঙ্কট এখনও কাটেনি। এই পরিস্থিতিতে শিথিলতা দেখালে তার পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। কারণ, এই ভাইরাসের ‘তৃতীয় ঢেউ’ আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে এ দেশে। এমনটাই হুঁশিয়ারি দিয়েছে কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)।
রবিবার জাতীয় বিজ্ঞান দিবস উপলক্ষে তিরুঅনন্তপুরমের রাজীব গাঁধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল সম্মেলনে বক্তৃতা করেন সিএসআইআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল শেখর সি মান্দে। সেখানে কোভিড নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বলেন তিনি। মান্দের মতে, আম জনতা থেকে বৈজ্ঞানিক মহল— করোনা নিয়ে আত্মতুষ্টি চেপে বসলে, তার পরিণতি বিপজ্জনক হতে পারে। পাশাপাশি, এই সঙ্কট কাটাতে গবেষণা সংস্থাগুলিকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করে যেতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
সোমবার সকাল থেকে দেশ জুড়ে টিকাকরণের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। অগস্টের মধ্যে অন্তত ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। পাশাপাশি, প্রথম পর্বে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ দেশবাসীকে টিকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। তবে এই বিপুল সংখ্যককে টিকা দেওয়া হলেও করোনার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিরোধ ক্ষমতা (হার্ড ইমিউনিটি) গড়ে উঠতে ঢের বাকি বলে মনে করছেন বৈজ্ঞানিকেরা। তাঁদের মতে, ‘হার্ড ইমিউনিটি’ গড়ে তুলতে জনসংখ্যার অন্তত ৭০ শতাংশকে টিকা দেওয়া উচিত। ভারত ছাড়াও গত কয়েক সপ্তাহে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, ইজরায়েল, নেদারল্যান্ডস-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকাকরণ শুরু হয়েছে। তা সত্ত্বেও চলতি বছরে হার্ড ইউমিউনিটির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা অসম্ভব বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(হু)। জানুয়ারিতে হু-র মুখ্য বৈজ্ঞানিক সৌম্য স্বামীনাথন একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে বিশ্বের কয়েকটি দেশে ভাইরাসের রক্ষাকবচ গড়ে তোলা সম্ভব হলেও ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বের সর্বত্র হার্ড ইউমিউনিটি-র লক্ষ্যপূরণ করা যাবে না।’’
ভারত যে ‘হার্ড ইউমিউনিটি’-র লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ধারেকাছে পৌঁছয়নি, সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছে দেশের গবেষক মহল। করোনা ঠেকাতে এখনও মাস্ক পরা, হাত ধোওয়া বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্ব মনে করিয়ে দিয়েছেন গবেষকরা। করোনার ভারতীয় বা অন্যান্য প্রজাতির কবল থেকে রক্ষা করতে টিকা কার্যকরী হবে বলেও মনে করেন মান্দে। তাঁর মতে, ‘‘কোভিড টিকার কার্যকারিতার উপর আমাদের আস্থা রয়েছে। যে প্রজাতিরই হোক না কেন, তা কোভিডের পূর্ণ রূপের বিরুদ্ধেই লড়াই করবে।’’