সোমবার থেকে দেশজুড়ে বয়স্কদের করোনার প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতীকী চিত্র
সোমবার থেকে দেশ জুড়ে বয়স্কদের করোনার প্রতিষেধক টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। টিকা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তবে পশ্চিমবঙ্গের বয়স্ক বাসিন্দাদের টিকা নিতে হলে ‘কো-উইন’ অ্যাপে নামধাম নথিবদ্ধ (রেজিস্ট্রেশন) করানো ছাড়া কোনও উপায় নেই। ওই অ্যাপ কাজ না করলে তামিলনাডুর মতো বিকল্প কোনও ব্যবস্থা আপাতত নেই বাংলায়। অ্যাপে নাম তুলতে প্রয়োজনে সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা বয়স্কদের সাহায্য করবেন। এমনই জানা যাচ্ছে স্বাস্থ্যভবন সূত্রে।
সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে রাজ্যে প্রায় ১৩৭টি কেন্দ্র থেকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। যদিও ‘কো-উইন’ অ্যাপ ঠিকমতো কাজ করবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় স্বাস্থ্যভবন। রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, “বয়স্কদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে সব রকমের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। টিকা নিতে হলে কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে রেজিস্ট্রশন করাতেই হবে। সরকারি হাসপাতালে টাকা লাগবে না। বেসরকারি হাসপাতাল থেকে টিকা নিতে হলে ২৫০ টাকা দিতে হবে।” কিন্তু বিশেষত, বয়স্কদের অনেকেই অ্যাপে নাম নথিভূক্ত করার বিষয়ে তেমন সড়গড় নন। তাঁরা কী করবেন? রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে সরকারি হাসপাতালে আসতে হবে। অ্যাপে নথিবদ্ধ করাতে স্বাস্থ্যকর্মীরা সাহায্য করবেন।
কেন্দ্রের কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় টিকাকরণ চলছে। এ রাজ্যেও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হচ্ছে না। যদিও তেলঙ্গানা সরকার আগাম ‘সমস্যার’ আঁচ করে কেন্দ্রের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করেছে। কেউ কো-উইন অ্যাপে নাম নথিবদ্ধ করাতে না পারলে তাঁরা ‘মি-সেবা’ এবং ‘ই-সেবা’ সেন্টারে গিয়ে নামধাম নথিবদ্ধ করাতে পারবেন। শুধু তা-ই নয়, এ ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে তেলঙ্গানা। যাঁদের বয়স ৫০ বছরের বেশি, তাঁদের করোনার টিকা দেওয়া হবে। আর যাঁদের বয়স ১৮ থেকে ৫০-এর মধ্যে এবং কো-মর্বিডিটি আছে, তাঁরাও টিকা পাবেন। কিন্তু এ রাজ্যে কো-উইনের বিকল্প কোনও ব্যবস্থা এখনও গড়ে তুলতে পারেনি প্রশাসন। গত ১৬ জানুয়ারি থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ-সহ প্রথমসারির করোনাযোদ্ধাদের টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে। দ্বিতীয় দফায় ২৭ কোটি মানুষকে টিকাকরণের আওতায় আনতে চায় কেন্দ্র। এই পর্যায়ে ষাটোর্ধ্বদের টিকা দেওয়া হবে। এ ছাড়াও যাঁদের বয়স ৪৫-৫৯ বছরের মধ্যে, তাঁরা যদি দীর্ঘদিন ধরে ‘২০টি ক্রনিক (দীর্ঘমোয়াদি)’ রোগ বা সমস্যার শিকার হন, তাঁরাও টিকা পাবেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, ‘কো-উইন ২.০’ অ্যাপে নামধাম নথিবদ্ধ করানোর সময় সচিত্র পরিচয়পত্রের নম্বর লাগবে। আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো নথি দিলেও চলবে। নামঠিকানা-সহ ওই অ্যাপে টিকাকরণ ‘নিশ্চিত’ হয়েছে দেখালে সেখানেই টিকাকেন্দ্রের নাম ও সময় উল্লেখ করা থাকবে। তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই নথির প্রতিলিপি এবং সচিত্র পরিচয়পত্র নিয়ে ওই কেন্দ্রে যেতে হবে। সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টে পর্যন্ত টিকা নেওয়ার ‘স্লট’ খোলা থাকবে। উপভোক্তারা দেখতে পাবেন কোথায়, কোন কোন সময়ে টিকা নেওয়ার জায়গা ফাঁকা রয়েছে। যাঁদের কো-মর্বিডিটি রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। অ্যাপের নির্দিষ্ট জায়গায় বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে। টিকাকরণের সময় প্রয়োজনীয় ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেট’ নিতে যেতে হবে। নিজের পছন্দমতো রাজ্য বেছে নেওয়া যাবে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে। প্রথম ডোজ পাওয়ার পর ওই টিকাকরণ কেন্দ্রেই দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে। কেউ প্রথম ডোজ দেওয়ার পর যদি অন্য শহরে চলে যান, তা হলে টিকাকরণ কেন্দ্র পালটানোর সুযোগ থাকবে। ২৮ দিন পর দেওয়া হবে দ্বিতীয় ডোজ।