ছবি এএফপি।
দেশে কোভিডে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা হাজারের গণ্ডি পেরোয়নি এত দিন। এ বার তা-ও হল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ দেশে মারা গিয়েছেন ১১২৯ জন। সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ৪৫,৭২০ জনের। এটিও রেকর্ড। আজ সকাল পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইট বলছে, ভারতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ১২.৩৮ লক্ষেরও বেশি। যদিও আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় আজ রাতেই এই সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ।
আগামিকালও এই হারে সংক্রমণ বাড়লে দেশে মোট করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ লক্ষে পৌঁছতে আর দেড় দিনও লাগবে না। দেশে অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা এখন ৪,২৬,১৬৭ জন। মোট সুস্থের সংখ্যা ৭.৮২ লক্ষের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ২৯,৫৫৭ জন সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হার হয়েছে ৬৩.১৮ শতাংশ। কেন্দ্র জানাচ্ছে, মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দেড় কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। গত কালই রেকর্ড ৩,৫০,৮২৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। আইসিএমআরের কর্তা লোকেশ শর্মা জানিয়েছেন, ভারত এখন দৈনিক চার লক্ষ পরীক্ষা করতেও সক্ষম।
তবে ৪৫ হাজার নতুন সংক্রমণের পরে পুরনো দু’টি প্রশ্নই ফের চর্চায় উঠে এসেছে। প্রথমত, আজ পর্যন্ত ২২ লক্ষ সংক্রমণের দেশ ব্রাজিলকে পেরিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে ভারতের আর কত দিন লাগবে? দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কারণে মোদী সরকার গোষ্ঠী-সংক্রমণের তত্ত্ব না-মানলেও সেই পরিস্থিতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি এখন থেকেই শুরু করা উচিত কি না।
বস্তুত, ঝাড়খণ্ড মন্ত্রিসভা গত কালই বিশেষ অর্ডিন্যান্স এনে ঘোষণা করেছে, কোভিড সুরক্ষাবিধি না-মানলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং দু’বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। প্রকাশ্যে মাস্ক না-পরলে বা থুতু ফেললেই এই নতুন আইনে অভিযুক্ত করা হবে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড জানিয়েছে, মাস্ক ও গ্লাভস যিনিই ব্যবহার করুন না কেন, সেগুলি ফেলে দেওয়ার আগে টুকরো টুকরো করে কেটে কাগজের ব্যাগে অন্তত ৭২ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। শপিং মল বা অফিসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বাতিল মাস্ক ও গ্লাভস রাখার জন্য জন্য আলাদা ডাস্টবিন রাখতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, পরিস্থিতি এমন বলেই দ্রুত প্রতিষেধক আবিষ্কারে জোর দেওয়া হচ্ছে। সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, করোনার টিকার দাম ১০০০ টাকার নীচেই রাখতে চান তাঁরা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ওই টিকার ১০০ কোটি ডোজ় তৈরির বরাত পেয়েছে সিরাম। গত কাল ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককে ভিডিয়ো কনফারেন্সে পুনাওয়ালা জানান, ভারতে ওই টিকার পরবর্তী পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ অগস্টের মাঝামাঝি শুরু হতে পারে। চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে টিকা তৈরি হয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন। পুনাওয়ালা জানান, ভবিষ্যতে প্রতি মাসে ওই টিকার ৬-৭ কোটি ডোজ় তৈরি করবে সিরাম। দাম মানুষের আয়ত্তে থাকবে। তাঁর আশা, সরকার ওই টিকা বিনামূল্যেই দেবে।