ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ। মেমারিতে। নিজস্ব চিত্র।
গণপিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ন’জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছিল বর্ধমান আদালত। মেমারির করন্দা গ্রামের ওই ঘটনার কয়েক মাসের মধ্যে সেই মেমারিতেই গরু চোর সন্দেহে ভিন্ এলাকার এক প্রৌঢ়কে গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছে। মারাও গিয়েছেন ওই প্রৌঢ়।
জেলার নানা জায়গায় আগেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েক বছর আগে কালনা, নদিয়ার একটা অংশে গাছে কীটনাশক দিতে আসা একাধিক ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হন। প্রচার, আইন হাতে তুলে না নেওয়ার কথা বলা হয়। তার পরেও চোর সন্দেহে বা ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটে। মনোবিদ সপ্তর্ষি অধিকারীর মতে, ‘‘আইন হাতে তুলে নেওয়া কখনই কাম্য নয়। এ সব ঘটনা বিশ্বাসের উপরে ভর করে সংক্রমণে মতো ছড়িয়ে পড়ে। যার ভবিষ্যৎ কেউ জানে না।’’
শনিবার রাতে মেমারির মেরুয়া গ্রামে ওই ঘটনার পরে আহত প্রৌঢ় মারা যান রবিবার সকালে, মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে। খবর আসতেই গ্রামে থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়। মেরুয়া-সহ আশেপাশের কয়েকটি পাড়া কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে যায়। মহিলাদের ক্ষোভ, এক বছর ধরে গ্রামে গরু চুরি হচ্ছে। গোপালন করেই জীবন চলে। পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখলে গ্রামের বাসিন্দাদের আইন হাতে তুলে নিতে হত না। অর্চনা মাঝি বলেন, “আমাদের বাড়ি থেকে দু'টি গরু চুরি হয়েছিল। আমাদের গোয়াল ঘরে রাত কাটাতে হচ্ছে। অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” তন্ময় সরও বলেন, “সবটাই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। গরু চোরদের খুব উপদ্রব। তালা ভেঙে গরু নিয়ে পালিয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি।”
জেলা পুলিশের দাবি, অভিযোগ পেলেই পুলিশ সক্রিয় হয়। পিটিয়ে খুনের সাফাই দেওয়ার জন্য পুলিশের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছে। নিয়মিত ভাবেই গণপিটুনির বিরুদ্ধে প্রচার করা হয়। মেমারির আমাদপুরের বাসিন্দা, বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য বলেন, “আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। পুলিশকেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।”