আক্রান্ত ও মৃত্যু রোজদিন বাড়লেও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা স্বস্তি দিচ্ছে ভারতকে। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশে করোনাভাইরাসে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা চার লাখ ছাড়িয়েছে রবিবার। সঙ্গে বজায় রয়েছে দ্রুত গতিতে হওয়া নতুন সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৯৩৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল চার লক্ষ ৪০ হাজার ২১৫ জন।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু সংখ্যাও বাড়তে বাড়তে মঙ্গলবার ১৪ হাজার ছাড়াল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ৩১২ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ১৪ হাজার ১১ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু ছয় হাজার টপকেছে। সেখানে মোট ছ’হাজার ২৮৩ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানী দিল্লিতে মৃত্যু ধারাবাহিক ভাবে বেড়েছে। করোনার প্রভাবে সেখানে মোট দু’হাজার ২৩৩ জনের মৃত্যু হল। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার এত জন। এর পর তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু (৭৯৪), পশ্চিমবঙ্গ (৫৬৯), উত্তরপ্রদেশ (৫৬৯), মধ্যপ্রদেশ (৫২১), রাজস্থান (৩৫৬), তেলঙ্গানা (২১৭) ও হরিয়ানা (১৬৯), কর্নাটক (১৪২), অন্ধ্রপ্রদেশ (১১১) ও পঞ্জাব (১০১)।
আক্রান্ত ও মৃত্যু রোজদিন বাড়লেও সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা স্বস্তি দিচ্ছে ভারতকে। এখন দেশে সুস্থ হয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের (মোট আক্রান্ত থেকে মৃত ও সুস্থ হয়ে ওঠা বাদ দিয়ে) সংখ্যার চেয়ে বেশি। মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৯৯৪ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট দু’লক্ষ ৪৮ হাজার ১৯০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গোড়া থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৭২১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্ত হলেন এক লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৯৬ জন। আক্রান্তের নিরিখে তামিলনাড়ুকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দিল্লি। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত ৬২ হাজার ৬৫৫ জন। তামিলনাড়ুতে ৬২ হাজার ৮৭ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাতে মোট আক্রান্ত ২৭ হাজার ৮২৫ জন।
উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ ও হরিয়ানা ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। উত্তরপ্রদেশ (১৮,৩২২), রাজস্থান (১৫,২৩২), পশ্চিমবঙ্গ (১৪,৩৫৮), মধ্যপ্রদেশে (১২,০৭৮) ও হরিয়ানা (১১,০২৫) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে কর্নাটক (৯,৩৯৯), অন্ধ্রপ্রদেশ (৯,৩৭২), তেলঙ্গানা (৮,৬৭৪), বিহার (৭,৮২৫), ও জম্মু ও কাশ্মীর (৬,০৮৮), অসম (৫,৫৮৬), ওড়িশা (৫,৩০৩), পঞ্জাব (৪,২৩৫), কেরল (৩,৩১০)-র মতো রাজ্যগুলি।
লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও সংক্রমণ বৃদ্ধিটা বেড়েছে। ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শুরু হতেই কলকাতার আশপাশ ছাড়িয়ে জেলাগুলিতেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ১৪ হাজার ৩৫৮ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)