বিমানবন্দরে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ছবি: এএফপি।
করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই শুক্রবার হালকা সর্দি-কাশি নিয়ে মুম্বই বন্দরে পৌঁছলেন চিন ফেরত দুই ব্যক্তি। কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়েই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার জন্য তাঁদের সরাসরি পাঠিয়ে দেন সরকারি হাসপাতালে। আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করে ওই দুই ব্যক্তিকে আপাপতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের (বিএমসি) এক স্বাস্থ্যকর্তা পদ্মজা কাসকর জানান, চিন থেকে আসা ওই দুই ব্যক্তির কাশি ও সর্দির উপসর্গ ধরা পড়েছে। যেহেতু চিনে এখন করোনাভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছেন না তাঁরা। সরকার পরিচালিত কস্তুরবা হাসপাতালে পৃথক ওয়ার্ড তৈরি করে ওই দু’জনের চিকিত্সা চলছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এমন সন্দেহ হলেই তাঁদের ওই আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠানো হবে বলেও জানান কাসকর।
চিন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনও রকম উপসর্গ ধরা পড়লেই তাঁদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠাতে বলা হয়েছে ছত্রপতি শিবাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে। এমনটাই জানিয়েছেন বিএমসি-র এক আধিকারিক। চিনের পর ইতিমধ্যেই এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর মিলেছে জাপান, হংকং, ম্যাকাউ, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, তাইল্যান্ড, আমেরিকা, সৌদি আরব, ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুর থেকে। ভারতেও যাতে কোনও ভাবে এই ভাইরাস সংক্রামিত না হয়, সে জন্য বিমানবন্দরগুলিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যে সব দেশ ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসের কবলে, সেখান থেকে কোনও ব্যক্তি ভারতে এলে তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বিমানবন্দরগুলোতে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, গত বুধবার পর্যন্ত দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই ও কলকাতা বিমানবন্দর-সহ দেশের নানা বিমানবন্দরে প্রায় ১২ হাজার যাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘বৃহত্তম গণতন্ত্রে বিপদ ডেকে আনছেন’, মোদী ও বিজেপিকে তোপ ব্রিটিশ পত্রিকার
আরও পড়ুন: নির্ভয়াকাণ্ড: তিহাড় জেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ফের আদালতে দণ্ডিতদের আইনজীবী
সৌদি আরবে কর্মরত এক ভারতীয় নার্সের দেহে করোনাভাইরাস মিলেছে। ভারতের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, আক্রান্ত নার্স জেড্ডার আসির ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। এই ভাইরাস যাতে কোনও ভাবেই এ দেশে সংক্রামিত হতে না পারে তার জন্য সব রকম বন্দোবস্ত করছে সরকার।
ভাইরাসের উত্সস্থল উহান-সহ ১৩টি শহরকে কার্যত ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে চিন সরকার। বেজিংয়ের নির্দেশে, এই শহরগুলোতে বিমান ওঠানামা, ট্রেন চলাচল এমনকি বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে বার হতে নিষেধ করা হয়েছে। চিনে ইতিমধ্যেই এই করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে।