—প্রতীকী ছবি
চার রাজ্যে হয়েছে আগেই। এ বার দেশ জুড়ে করোনার টিকাকরণ প্রক্রিয়ার মহড়া বা ‘ড্রাই রান’ চালানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। পরশু, ২ জানুয়ারি সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ওই মহড়া হবে।
নতুন বছরের শুরুতেই এ দেশে ছাড়পত্র পেতে চলেছে করোনার প্রতিষেধক। আর তা হয়ে গেলেই পুরোদমে গণ-টিকাকরণ অভিযানে নামার পরিকল্পনা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। প্রাথমিক টিকাকরণের লক্ষ্য স্বাস্থ্যকর্মীরা-সহ তিরিশ কোটি দেশবাসী। দেশ জুড়ে করোনার টিকাকরণ শুরুর আগে রাজ্যে-রাজ্যে পরিকাঠামো কতটা তৈরি, বাস্তবে টিককারণের সময়ে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে— এ সবই বুঝে নিতে পরশু গোটা দেশে ‘ড্রাই রান’ হবে। প্রতিটি রাজ্যের রাজধানীর অন্তত তিনটি টিকাকরণ কেন্দ্রে ওই মহড়া চলবে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, বেশ কিছু রাজ্যে নির্দিষ্ট তিনটি কেন্দ্র ছাড়াও দুর্গম এলাকায় শিবির করে সেখানে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তা-ও দেখে নিতে চাইছে সরকার।
আরও পড়ুন: ২০২২-এর মার্চেই কোভিডের আগের অবস্থায় ফিরবে অর্থনীতি: নীতি আয়োগ
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপির আড়ালের সেনাপতি শিবপ্রকাশের দায়িত্ব বাড়ল ভোটের মুখে
চলতি সপ্তাহের শুরুতে দু’দিন এমন মহড়া চলেছিল পঞ্জাব, অসম, গুজরাত ও অন্ধ্রপ্রদেশের আটটি জেলায়। তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায় কেন্দ্র। আজ দেশ জুড়ে মহড়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির স্বাস্থ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। ঠিক হয়েছে, প্রতিটি টিকাকরণ কেন্দ্রে অন্তত পঁচিশ জনকে নকল টিকা দেওয়া হবে। যার মাধ্যমে দেখা হবে, গোটা প্রক্রিয়াটি মসৃণ ভাবে চলছে কি না। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘বাস্তবে টিকাকরণের জন্য যে ‘কো-উইন’ সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে, তা ঠিক ভাবে কাজ করছে কি না, তা-ও মহড়ার সময়ে খুঁটিয়ে দেখা হবে। এর জন্য প্রত্যেকটি রাজ্যকে তাদের টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতে যাঁদের (স্বাস্থ্যকর্মী) নাম নথিভুক্ত রয়েছে, তাঁদের বিষয়ে সবিস্তার তথ্য আপলোড করতে বলা হয়েছে।’’
মূল কেন্দ্র থেকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রেখে টিকা-কেন্দ্রে প্রতিষেধক নিয়ে যাওয়া, সেগুলিকে যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা কিংবা টিকাকরণের সময়ে টিকা ব্যবহার করতে গিয়ে কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না— সবই খতিয়ে দেখা হবে এই মহড়ায়। দেখা হবে টিকা-কেন্দ্রগুলিতে পর্যাপ্ত জায়গা আছে কি না, কর্মীরা ভিড় সামলাতে দক্ষ কি না, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা কেমন। গোটা দেশে টিকাকরণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ৯৬ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের মধ্যে ২৩৬০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল ট্রেনিং অব ট্রেনার্সে।
মহড়া-পর্ব নিয়ে সাজো সাজো রব বঙ্গেও। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, টিকা বণ্টনের জন্য নির্দিষ্ট সফটওয়্যারটির ইনপুট এবং আউটপুট পদ্ধতি ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তা হাতে-কলমে পরীক্ষা করে দেখা হবে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, তিনটি কেন্দ্রে ওই কাজ চলবে। আগামিকাল সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করার কাজ শেষ করবে দফতর। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “সফটওয়্যার পদ্ধতির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে। টিকাকরণ প্রশ্নে সব দিক থেকে প্রস্তুত থাকতে হচ্ছে। এটা তারই অঙ্গ।”