—প্রতীকী ছবি।
আরএসএস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সদর দফতর যে শহরে, সেই নাগপুর থেকেই কংগ্রেস ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করছে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস। সে দিনই নাগপুরে জনসভা করতে চলেছে কংগ্রেস। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে রাহুল, সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা, গান্ধী পরিবারের তিন সদস্যই নাগপুরের জনসভায় হাজির হবেন। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সমস্ত সদস্য, মুখ্যমন্ত্রী, পরিষদীয় দলনেতারাও নাগপুরের জনসভায় যোগ দেবেন। এই জনসভা থেকেই রাহুল গান্ধী কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে বিজেপি-আরএসএসকে হঠানোর ডাক দিতে চাইছেন। ১৯২০ সালে কংগ্রেসের নাগপুর অধিবেশন থেকেই মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতা আন্দোলনে কংগ্রেসের প্রধান মুখ হিসেবে উঠে এসেছিলেন। ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনে সিলমোহর পড়েছিল। সে দিক থেকেও নাগপুর কংগ্রেসের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমে ঠিক ছিল, বিরোধীদের সম্মিলিত মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-র প্রথম জনসভা হবে নাগপুরে। নানা তালেগোলে তা আর হয়নি। আগামী সপ্তাহে ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে ‘ইন্ডিয়া’-র দলগুলির বৈঠক। সেখানে জোটের জনসভা কবে থেকে শুরু হবে, তা ঠিক হবে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসেই ‘ইন্ডিয়া’-র দলগুলির অন্তত দু’তিনটি জনসভা করার চেষ্টা হবে। তবে তার আগে কংগ্রেস নিজের প্রতিষ্ঠা দিবসকে কাজে লাগিয়ে প্রচারে নেমে পড়তে চাইছে।
আজ কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল নাগপুরে গিয়ে মহারাষ্ট্রের শীর্ষ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার পরে বেণুগোপাল জানিয়েছেন, এই জনসভায় অন্তত ১০ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ অঞ্চলের নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতর। কিন্তু বিজেপি-আরএসএসের বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধী যখন ভারত জোড়ো যাত্রা করেছিলেন, সে সময় মহারাষ্ট্রের বিদর্ভের শেগাঁও, নানদেদের জনসভাতেই সবথেকে বেশি জনসমাবেশ হয়েছিল।
কেন নাগপুর? কংগ্রেস সূত্রের ব্যাখ্যা, রাহুল গান্ধী বিজেপি বা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইকে বরাবরই মতাদর্শগত লড়াই হিসেবে দেখেন। সে কারণেই তিনি বিজেপির সঙ্গে একই বন্ধনীতে আরএসএসের নাম উচ্চারণ করেন। বিজেপি-আরএসএসের মেরুকরণ ও সামাজিক বিভাজনের নীতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টাকে তুলে ধরতে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ করেছিলেন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচার নাগপুর থেকেই শুরু করে একই সুর বেঁধে দিতে চাইছেন তিনি।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘কংগ্রেসের ইতিহাসে, বিশেষত স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে নাগপুর গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই নাগপুরেই ১৯২০ সালের ডিসেম্বরে নাগপুরে কংগ্রেসের অধিবেশন থেকে দেশের রাজনীতিতে মহাত্মা গান্ধীর উত্থান নয়। অসহযোগ আন্দোলনের প্রস্তাব পাশ হয়। সেখান থেকেই স্বাধীনতা আন্দোলনের মোড় ঘুরে যায়। এখন বিজেপি-আরএসএস জাতীয়তাবাদ, দেশপ্রেমের ধুয়ো তুললেও সেই স্বাধীনতা আন্দোলনে আরএসএস বা বিজেপির ভূমিকা ছিল না। নাগপুরে আরএসএসের সদর দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে তা মনে করিয়ে দেওয়াটা জরুরি।’’