ওয়েনাড় লোকসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
কেরলের ওয়েনাড়ের লোকসভা উপনির্বাচনে বুধবার ভোট পড়েছে ৬৪.৭২ শতাংশ। গত কয়েক বারের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় যা অনেকটাই কম। ভোটের হার কেন এতটা কমে গেল, তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল জানিয়েছেন, ভোটদানের হার কমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে একটি দলীয় স্তরে পর্যালোচনা করা হবে। ভোটদানের হার কমে যাওয়ার বিষয়ে কংগ্রেসের সব নেতারাই চিন্তিত বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওয়েনাড়ে এ বারের উপনির্বাচন থেকেই ভোটের ময়দানে পা রেখেছেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। চলতি বছরের শুরুতে রাহুল গান্ধী ওয়েনাড় থেকে জিতেছিলেন। পরে তিনি সেই আসন ছেড়ে দেন এবং উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী করে প্রিয়ঙ্কাকে। রাহুল যখন প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন ভোট পড়েছিল ৭২.৯২ শতাংশ। এর আগে ২০১৯ সালেও যখন রাহুল প্রার্থী ছিলেন, তখনও ওয়েনাড়ে ভোটদানের হার ছিল ৮০.৩৩ শতাংশ।
সাধারণত উপনির্বাচনগুলিতে ভোটদানের হার কিছুটা কমই দেখা যায়। তবে ওয়েনাড়়ে এ বারের উপনির্বাচনের দিকে কংগ্রেস বেশ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রিয়ঙ্কাকে পাঁচ লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কংগ্রেস। ভোটদানের হার কমে যাওয়ায় সেই লক্ষ্যমাত্রাও কংগ্রেসের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জের হয়ে উঠেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে যখন ৮০.৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছিল ওয়েনাড়ে, তখনও রাহুল পাঁচ লাখ ভোটের ব্যবধানে জিততে পারেননি। সেই বার রাহুলের জয়ের ব্যবধান ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার ভোটের। চলতি বছরের শুরুতে রাহুল জিতেছিলেন সাড়ে তিন লাখের কিছু বেশি ভোটের ব্যবধানে।
মাত্র সাত মাসের ব্যবধানে কী কারণে ওয়েনাড়ে ভোটদানের হার এতটা কমে গেল, তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে পর্যালোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় নেতাদের একাংশের মতে, সাধারণ মানুষের ভোটদানে অনীহা তৈরির নেপথ্যে একাধিক কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম ওয়েনাড়ে ধসের পর থেকে পর্যটকের সংখ্যা তুলনায় কমেছে। যে কারণে আর্থিক সমস্যার মুখে পড়েছেন ভোটারদের একাংশ। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত নিয়েও ভোটারদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। আবার সাত মাস আগে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের একটি অংশ বর্তমানে ওয়েনাড়ে নেই। এমন বেশ কিছু কারণে ভোটদানের হার কমে গিয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
কংগ্রেস নেতা বেনুগোপালও জানিয়েছেন, ভোটদানের হার কমে যাওয়ার বিষয়ে দলীয় নেতৃত্ব উদ্বিগ্ন। তবে প্রিয়ঙ্কার জয়ের ব্যাপারে এখনও আশাবাদী তিনি। জয়ের ব্যবধানেও এর কোনও প্রভাব পড়বে না বলে আশা তাঁর। কংগ্রেসের স্থানীয় নেতারা অবশ্য দাবি করছেন, ওয়েনাড়ে কংগ্রেসের সমর্থক ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা নিজেদের ভোট দিয়েছেন। ওয়েনাড়ে প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে লড়ছেন সিপিআই প্রার্থী সত্যন মোকেরি। ভোটদানের সামগ্রিক হার কমলেও, এলডিএফ শিবির ঠিকঠাকই ভোট পেয়েছে বলে আশাবাদী তিনি। সত্যনের কথায়, “যাঁরা ভোট দেননি তাঁরা এলডিএফের ভোটার নন। তাঁরা ইউডিএফের ভোটার।”