(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ (ডান দিকে)। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
এক বছর কেটে গিয়েছে। এখনও মণিপুর অশান্ত। মাঝে মাঝেই হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্ব ভারতেই এই রাজ্যটি। অশান্ত মণিপুর নিয়ে বার বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতির দাবি করেছে বিরোধীরা। এমনকি, মোদী যাতে মণিপুরে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে আসেন, সেই দাবিও শোনা গিয়েছে তাদের গলায়। এই আবহে মোদীর ইউক্রেন সফরের খবর প্রকাশ্যে আসার পর কংগ্রেস আবারও এক বার মণিপুর ইস্যুতে সরব হল। প্রশ্ন তুলল, আগে মণিপুর নাকি ইউক্রেন?
নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। কংগ্রেসের প্রশ্ন, বীরেন কি প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন? কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে লেখেন, ‘‘মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী কি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন? মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন?’’
শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে বিরোধী শিবির থেকে উপস্থিত ছিলেন এক মাত্র বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বৈঠকের মাঝপথে তিনি বেরিয়ে এসে অভিযোগ করেন, তাঁকে বলতে দেওয়া হয়নি। মাইক বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও করেন মমতা। যদিও কেন্দ্র সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বিরোধী শিবিরকে একজোট মমতার পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। জয়রাম নীতি আয়োগ বৈঠককে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এ বার মণিপুর ইস্যুতে আরও এক বার কেন্দ্রকে আক্রমণ করালেন তিনি।
গত বছরের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে। মণিপুরে কুকি-মেইতেই সংঘর্ষ শুরুর পরে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ২০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৭০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়ে ত্রাণশিবিরে। অশান্ত মণিপুরে বার বার ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে। কিন্তু মোদী কেন চুপ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আগামী মাসেই ইউক্রেন যেতে পারেন মোদী। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইতি টানার প্রক্রিয়া নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর। এর আগে রাশিয়া সফরেও গিয়েছিলেন তিনি। তার পরই কংগ্রেস প্রশ্ন তুলছে, মণিপুর কেন আসছেন না মোদী।