বিবিসির দফতরে আয়কর হানার ঘটনায় বিরোধীদের নিশানা মোদীকে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
‘ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন’ (বিবিসি)-এর দিল্লি এবং মুম্বইয়ের দফতরে আয়কর হানা প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সমালোচনা করল কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা প্রমাণ করছে বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারের।’’
‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের জন্য গত দু’সপ্তাহ ধরে সংসদে ধারাবাহিক ভাবে যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ার দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী সাংসদেরা। কিন্তু সেই দাবি না মেনে এক মাসের জন্য সংসদের বাজেট অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেই প্রসঙ্গের উল্লেখ করে জয়রাম বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম জেপিসি। কিন্তু দেখছি কেন্দ্রের নজর শুধু বিবিসির দিকে।’’
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এর প্রদর্শন বন্ধের জন্য ‘তৎপরতা’ শুরু করেছিল মোদী সরকার। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে। ‘দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি।
যদিও বিবিসি দাবি করে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি। এই পরিস্থিতিতে জানুয়ারির শেষে কেন্দ্রের তরফে ইউটিউব এবং টুইটারকে বিবিসি-র তথ্যচিত্রের লিঙ্ক সমাজমাধ্যম থেকে তুলে নিতে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি, আইটি রুলস ২০২১-এর জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে একাধিক টুইট তুলে নেওয়ার জন্যও কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়।
কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা তখন থেকেই বিষয়টি ‘সেন্সরশিপ’ আখ্যা দিয়ে আসছেন। মঙ্গলবার বিবিসির দফতরে আয়কর হানার পরে কংগ্রেস নেতা জয়রামের প্রতিক্রিয়া— ‘‘দেশে অঘোষিত জরুরি অবস্থা চলছে।’’ আদানি কাণ্ড নিয়ে বিজেপির কিছু লুকোনোর নেই বলে মঙ্গলবার দাবি করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ প্রসঙ্গে জয়রামের প্রশ্ন, ‘‘তা হলে বিজেপি কেন জেপিসি তদন্তে রাজি হচ্ছে না?’’