হংসরাজ ভরদ্বাজ। —ফাইল চিত্র
হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বংশীলাল তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গাঁধীর কাছে, জরুরি অবস্থার সময়ে। প্রথম বৈঠকেই ইন্দিরার নজরে পড়ে যান ৪০ বছর বয়সি আইনজীবী হংসরাজ ভরদ্বাজ। তার পর থেকে ইন্দিরার হয়ে অনেক মামলা সামলানো শুরু করেন তিনি।
এর পর চার দশক ধরে গাঁধী পরিবারের প্রতি অনুগতই থেকেছেন হংসরাজ। ২০০৪ সালে মনমোহন সিংহ সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে তাঁকেই বেছে নেন সনিয়া গাঁধী। পরে দুই রাজ্যে রাজ্যপালও হন। গতকাল বিকেল চারটেয় সেই হংসরাজের জীবনাবসান হলেও গোটা রাত কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের থেকে।
অবশেষে মৃত্যুর ১৮ ঘণ্টা পর কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়ার গাঁধীর বিবৃতি আসে, আর ১৯ ঘন্টা পরে টুইট করেন রাহুল। অথচ গত রাতেই হংসরাজের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে এবং দুঃখপ্রকাশ করে টুইট এসে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। দিল্লি হিংসার তিন দিন পরেও যাঁর কোনও টুইট দেখা যায়নি। শোকবার্তা দেন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ, বিজেপির আরও নেতারা। আজ সকাল থেকে এই নিয়ে হইচই শুরু হয় রাজধানীতে। চার দশক ধরে যে ব্যক্তি কংগ্রেসকে ‘সেবা’ করলেন, তাঁকে শ্রদ্ধাও জানানো হবে না?
আরও পড়ুন: জনতা বলছে, যুদ্ধ চাই না
কংগ্রেসের এক ক্ষুব্ধ নেতা বললেন, ‘‘আমরা শোক জানাব কি না, তার জন্য হাইকম্যান্ডের অপেক্ষায় রয়েছি। কারণ, তাঁদের দিক থেকে কোনও বিবৃতি আসেনি!’’ এ পরিস্থিতি কেন? কংগ্রেসের সূত্র বলছে, জীবদ্দশায় হংসরাজ
বলেছেন, রাহুল গাঁধী এখনও ‘নেতা’ হয়ে উঠতে পারেননি। বরং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হোক। ভাই-বোনের মধ্যে এই বিভেদ তৈরির চেষ্টায় অসন্তুষ্ট ছিল ১০, জনপথ। এক বার সনিয়ারও সমালোচনা করে হংসরাজ বলেছিলেন, তোষামোদকারীরা তাঁকে ঘিরে রয়েছেন। সব মিলিয়ে চর্চা শুরু হয়, নরসিংহ রাও-এর ক্ষেত্রে যা হয়েছিল, হংসরাজের ক্ষেত্রেও কি সেই ‘উপেক্ষার’ নীতি নিচ্ছে ১০, জনপথ? অবশেষে টুইট ও শোকবার্তার পর, আজ শেষকৃত্যের আগে মনমোহন সিংহকে সঙ্গে নিয়ে রাহুল যান হংসরাজের বাড়িতে।