সনিয়া গাঁধী এবং অশোক গহলৌত। ফাইল চিত্র।
গাঁধী পরিবারের অনুগত অশোক গহলৌত বনাম ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর শশী তারুর। পরিস্থিতির নাটকীয় বদল না হলে, অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে কংগ্রেস সভাপতির লড়াই হতে পারে এই দুই নেতার মধ্যে। নয়া সভাপতি নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই শতাব্দী প্রাচীন দলের অন্দরের ‘তৎপরতা’ শুরু হয়ে গিয়েছে।
বিদায়ী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর তলব পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরেই কেরলে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ ছেড়ে দিল্লি পৌঁছেছেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল। অন্যদিকে, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী গহলৌত মঙ্গলবার রাতে কংগ্রেস বিধায়কদলের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। সেখানেই তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করতে পারেন বলে জল্পনা। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সভাপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্যই বেণুগোপালকে দিল্লি তলব করেছেন সনিয়া।
নতুন সভাপতি বেছে নেওয়ার জন্য কংগ্রেসে আগামী ১৭ অক্টোবর ভোট হবে। ভোটগণনা ১৯ অক্টোবর। এআইসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলের তরফে ২২ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ৮ অক্টোবর। সর্বসম্মতিক্রমে কেউ সভাপতি হিসাবে মনোনীত হলে, কিংবা একের বেশি প্রার্থী না থাকলে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়বে না।
কিন্তু বর্তমান ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বতা হতে পারে গহলৌত-তারুরের। যদিও ইতিমধ্যেই অনেকগুলি প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী সভাপতি হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করে তা অনুমোদন করেছে। ফলে শেষ পর্যন্ত ভোটাভুটি এড়িয়ে সর্বসম্মতির ভিত্তিকে সভাপতি মনোনয়নের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
মরুরাজ্যের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী, ৭১ বছরের অশোক কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের অন্যতম। ছাত্রাবস্থা থেকেই কংগ্রেস রাজনীতি করেছেন তিনি। ‘গাঁধী পরিবারের অনুগত এবং আস্থাভাজন’ হিসেবেই দলের অন্দরে তাঁর পরিচিতি। গহলৌত সভাপতি হলে তাঁর স্থানে সচিন পাইলটকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী করা হতে পারে বলেও জল্পনা রয়েছে। যদিও পাইলট সম্পর্কে গহলৌত শিবিরের আপত্তি রয়েছে। পাইলট এখন দক্ষিণ ভারতে রাহুলের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রায় রয়েছেন। ফলে জয়পুরে বিধায়কদের বৈঠকে তিনি হাজির থাকতে পারবেন না।
অন্য দিকে, ২০২০-র অগস্টে কংগ্রেসের অন্দরে ‘সুনেতৃত্বের অভাব এবং সাংগঠনিক সমস্যা’ তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়াকে যে ২৩ জন নবীন এবং প্রবীণ নেতা চিঠি পাঠিয়েছিলেন, সেই তালিকার অন্যতম নাম তারুরের। দলে স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের পাশাপাশি, ‘হাইকমান্ডের’ কর্মপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা সেই ‘বিদ্রোহী ২৩’ (জি-২৩ নামে যাঁরা পরিচিত) –এর মধ্যে গুলাম নবি আজাদ, কপিল সিব্বল, জিতিন প্রসাদের মতো কয়েক জন আগেই দল ছেড়েছেন।