তারুরের সেই ‘ইস্তাহার’। ছবি: পিটিআই।
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়ন পেশের পরেই নয়া বিতর্কে জড়ালেন শশী তারুর। কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শুক্রবার যে ইস্তাহার (প্রচার-পুস্তিকা) প্রকাশ করেছেন তাতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের একাংশ বাদ পড়ে। তবে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে দ্রুত মানচিত্রের ভুল সংশোধন করা হয়। বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তড়িঘড়ি ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’ চেয়ে নেন তারুরও। পরে তিনি নিজের টুইটার হ্যান্ডলে লেখেন, “কেউই কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে এমন কাজ করে না। স্বেচ্ছাসেবকদের একটা ছোট দল এই ভুলটা করে ফেলেছে।” একই সঙ্গে তিনি লেখেন, “আমরা তড়িঘড়ি ভুল সংশোধন করেছি এবং এই ভুলের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি।”
তবে, তারুর ভুল স্বীকার করার আগেই রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়ে যায়। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য শুক্রবার তারুরকে নিশানা করে বলেন, ‘‘কংগ্রেসের সভাপতি পদপ্রার্থী শশী তারুর ভারতের একটি বিকৃত মানচিত্র প্রকাশ করেছেন। দলের নেতা রাহুল গান্ধী যখন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ করছেন তখন দলের সভাপতি পদপ্রত্যাশী ভারতকে টুকরো করতে চাইছেন। হয়তো তিনি মনে করেছেন, এ ভাবেই গান্ধীদের কৃপা পাওয়া যাবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালেও একটি ভুল মানচিত্র প্রকাশের অভিযোগ উঠেছিল তারুরের বিরুদ্ধে।
ইন্টারনেটের বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তারুরের ফলোয়ারের সংখ্যা কয়েক লক্ষ। তাঁদের একাংশও প্রশ্ন তুলেছেন, মনমোহন সিংহের সরকারে বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপুঞ্জে আন্ডার সেক্রেটারি পদের দায়িত্ব পালন করা তারুর কী ভাবে ভারতের ভুল মানচিত্র নিজের প্রচার পুস্তিকায় প্রকাশ করতে পারেন!
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য শুক্রবার তারুরের পাশাপাশি মনোনয়ন পেশ করেছেন দলের প্রবীণ নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৭ অক্টোবর কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ মল্লিকার্জুনের সঙ্গে ‘জি-২৩’ গোষ্ঠীর সদস্য শশী তারুরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কংগ্রেসে ‘বিক্ষুব্ধদের গোষ্ঠী’ হিসাবে পরিচিত জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতা মণীশ তিওয়ারি এবং পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ শুক্রবার মল্লিকার্জুনকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, ২০২০-র অগস্টে কংগ্রেসের অন্দরে ‘সুনেতৃত্বের অভাব এবং সাংগঠনিক সমস্যা’ তুলে ধরে অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়াকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন ২৩ জন নবীন এবং প্রবীণ নেতা। দাবি তুলেছিলেন, দলে স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের। পাশাপাশি, ‘হাইকমান্ডের’ কর্মপদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। দলের অন্দরে সেই ‘বিদ্রোহী ২৩’ (গ্রুপ-২৩ বা জি-২৩ নামে যাঁরা পরিচিত)-এর মধ্যেই ছিলেন তারুর।