কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মানহানির দায়ে অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী আদালতের নির্দেশ মেনে হাজিরা দিলেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুর আদালতে হাজির হয়ে বিচারক শুভম বর্মাকে জানিয়েছেন, তিনি নির্দোষ।
রাহুলের আইনজীবী কাশীপ্রসাদ শুক্ল বলেন, ‘‘আমার মক্কেল আদালতকে জানিয়েছেন, তিনি কারও বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেননি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সস্তা প্রচার পেতেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।’’ রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৮ সালে কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে শাহের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশের বিজেপি নেতা বিজয় মিশ্র রাহুলের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগে সুলতানপুর আদালতে মামলা করেছিলেন। আদালতের নির্দেশে সেই মামলায় হাজিরা দিতে শুক্রবার দিল্লি থেকে বিমানে লখনউ পৌঁছে সড়কপথে সুলতানপুরে যান রাহুল। যাত্রাপথের বিভিন্ন স্থানে তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে হাজির হয়েছিলেন কংগ্রেসের বহু নেতা, কর্মী এবং সমর্থক।
অভিযোগকারীর আইনজীবী সন্তোষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘রাহুল গান্ধী বিচারকের সামনে তাঁর বয়ান রেকর্ড করিয়েছেন। আগামী ১২ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।’’ এই মামলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে আদালত রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে ব্যক্তিগত হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ তা পালন না করায় ২৬ জুলাই হাজিরার ‘শেষ সুযোগ’ দিয়েছিল সুলতানপুর আদালত। সেই নির্দেশ মেনেই তিনি শুক্রবার হাজিরা দেন। ২০২৩ সালের বিধানসভা ভোটের প্রচারের সময়ও কর্নাটক বিজেপির তরফে রাহুলের বিরুদ্ধে একটি মানহানির মামলা করা হয়েছিল।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অবমাননার অভিযোগেও মামলা হয়েছে রাহুলের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের প্রচারের সময় কর্নাটকের কোলারে ‘মোদী’ পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের জন্য গত বছরের ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা দু’বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। গুজরাতের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদীর দায়ের করা ওই ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী রাহুলের লোকসভার সাংসদ পদও বাতিল করা হয়েছিল। এর পর গুজরাত হাই কোর্ট সাজা বহাল রাখলেও গত বছরের ৪ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আরএস গাভাই এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের বেঞ্চ সুরাত আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়। ফলে জেলযাত্রা থেকে রেহাইয়ের পাশাপাশি সাংসদ পদও ফিরে পান রাহুল।