অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
সিএজি-র পরে এ বার এজি-র শংসাপত্র নিয়ে অভিযোগ! গত সপ্তাহে সিএজি-র রিপোর্টকে হাতিয়ার করে মোদী সরকার তথা বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিল, কেন্দ্রীয় অনুদানের ২ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি টাকা খরচের শংসাপত্র জমা দিতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন লোকসভায় দাঁড়িয়ে অভিযোগ তুললেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার জিএসটি ক্ষতিপূরণ পেতে চার বছরের এজি-র সার্টিফিকেট বা অ্যাকাউন্ট্যান্ট জেনারেলের শংসাপত্র জমা দেয়নি।
জিএসটি চালুর পরে ঠিক হয়েছিল, রাজ্যগুলির নির্দিষ্ট পরিমাণ লক্ষ্য অনুযায়ী আয় না হলে কেন্দ্র তার ক্ষতিপূরণ দেবে। কিন্তু ওই নির্দিষ্ট লক্ষ্যের আয় ও রাজ্যের বাস্তবিক আয়ের ফারাকে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে তার সঙ্গে রাজ্যকে এজি-র শংসাপত্র দিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে কলকাতায় ধর্নায় বসেছেন, তখন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গের সরকার চার বছরের এজি-র শংসাপত্রই দেয়নি।
পাল্টা জবাবে রাজ্যের অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, তাঁরা সমস্ত নথি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “২০১৭-২০২২ সালের মধ্যে ক্ষতিপূরণের সময়ের কথা বলা হচ্ছে। আমরা আমাদের দিক থেকে যা তথ্য দেওয়ার, সব পাঠিয়েছি। কেন্দ্র খতিয়ে দেখুক, তাদের এজি সেটা অর্থ মন্ত্রকে পাঠিয়েছে কি না। এ সব বিভ্রান্ত করা তথ্য লোকসভায় বলা যায় কি?”
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সীতারামন বলেছেন, রাজনৈতিক কারণে কোনও রাজ্যের টাকা আটকানো হচ্ছে না। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সম্প্রতি কেরল, কর্নাটকের মতো অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের টাকা আটকানোর অভিযোগ উঠেছে। কেরল, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী চলতি সপ্তাহে দিল্লি এসে ধর্নায় বসবেন বলে জানিয়েছেন। সার্বিক ভাবে উত্তর ভারতের তুলনায় দক্ষিণের রাজ্যগুলি বেশি অর্থ পাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আজ লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের অভিযোগ তুলে বলেন, যত দিন কর্নাটকে বিজেপি সরকার ছিল, তখন সব ভাল ভাবে চলছিল। সরকার বদলের পর থেকেই টাকা আটকানো হচ্ছে। নির্মলা পাল্টা বলেন, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এ সব অভিযোগ তোলা হয়। রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যের টাকা আটকানো হয় না। আমার কোনও ব্যক্তিগত ক্ষমতা নেই। কেন্দ্রীয় করের কতখানি অংশ কোন রাজ্য পাবে, তা অর্থ কমিশন ঠিক করে।’’ তাঁর দাবি, রাজনৈতিক স্বার্থে রাজ্যগুলির সঙ্গে রাজনৈতিক বৈষম্যের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। যদি কোনও রাজ্যের মনে হয়, তাদের আরও বেশি অর্থ প্রয়োজন, তা হলে সেটা নতুন অর্থ কমিশনের কাছে বলতে হবে।