Student Unnatural Death

‘ভাইকে কিন্তু ওই কলেজে পাঠিয়ো না’! মাকে চিঠি লিখে আত্মঘাতী প্রথম বর্ষের কলেজ পড়ুয়া

পরীক্ষায় আরও ভাল ফল করতেই হবে। কর্তৃপক্ষের এই চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী ছাত্র। পুলিশ কলেজের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:০০
Share:

— প্রতীকী ছবি।

আরও ভাল ফল করতে হবে। শিক্ষকদের দেওয়া চাপ আর নিতে না পেরে চরম পদক্ষেপ কলেজপড়ুয়ার। আত্মঘাতী হওয়ার আগে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে চিঠিতে লিখে গেল, ‘‘ভাইকে যেন ওই কলেজে পাঠানো না হয়।’’ ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদে। একটি বেসরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার এমন পরিণতিতে কলেজের প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

Advertisement

চৈতন্যপুরীর একটি বেসরকারি কলেজে পড়ত বছর ১৬-র ওই ছাত্র। পরীক্ষায় আরও ভাল ফল করতেই হবে, তাকে এ কথা বার বার বলতেন কলেজের শিক্ষকেরা। সেই চাপ নিতে পারল না পড়ুয়া। মাঝপথেই অপমৃত্যু ঘটল একটি স্বপ্নের। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ নিজের ঘর থেকেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল ছাত্রের। সঙ্গে পাওয়া গেল একটি চিঠিও। তাতে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে পড়ুয়া। পাশাপাশি, মা-বাবাকে অনুরোধ করেছে, ভাইকে যেন ওই কলেজে না পাঠানো হয়। একই সঙ্গে পড়ুয়ার চিঠির ছত্রে ছত্রে রয়েছে, কী ভাবে প্রতি দিন তাকে পরীক্ষায় আরও ভাল ফল করতে হবে, এ কথা বলে চাপের মুখে ফেলা হত। চিঠিতে পড়ুয়া দাবি করেছে, এ কাজ করতেন কলেজের সাধারণ কর্মী থেকে শুরু করে প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপাল।

সকালে ছেলের ঘরে ঢুকে এই দৃশ্য দেখে হতবাক বাড়ির লোকেরা। তড়িঘড়ি ওই পড়ুয়াকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তত ক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কলেজের চাপের কাছে যে সে হেরে গেল, চিঠিতে তা-ও স্পষ্ট করে লিখেছে মৃত পড়ুয়া। এই চিঠির ভিত্তিতেই মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মীরপেট থানার ইন্সপেক্টর কে কিরণ কুমার বলেন, ‘‘পরিবারের লোকেদের অভিযোগ ছিল, কলেজের প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপাল পরীক্ষায় আরও ভাল ফল চেয়ে নিয়মিত ছাত্রটির উপর চাপ দিতেন। তার ভিত্তিতেই আমরা একটি মামলা রুজু করেছি।’’ জানা গিয়েছে, কলেজের প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারা দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ইদানীং, পড়ার চাপে কমবয়সি পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মঘাতী হওয়ার প্রবণতা লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। ভারতের উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার অন্যতম সেরা জায়গা হিসাবে নাম করেছে রাজস্থানের কোটা। সেখানেও একের পর এক পড়ুয়ার আত্মহননের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভাল ফল করতেই হবে। মা-বাবাদের এই প্রত্যাশার সঙ্গে সব সময় তাল মেলাতে পারেন না পড়ুয়ারা। পাশাপাশি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্ন ভাবে আরও ভাল ফল করার প্রত্যাশা বোঝা হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের কাছে। তারই পরিণতিতে চরম সিদ্ধান্ত নিতে দু’বার ভাবেন না আজকের তরুণ প্রজন্মের একটি অংশ। হায়দরাবাদেও ঘটল সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement