দিল্লিতে লাদাখ ভবনের সামনে অনশনে সোনম ওয়াংচুক। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
কলকাতায় জুনিয়র ডাক্তারেরা আমরণ অনশন চালাচ্ছেন। শনিবার থেকে শুরু হয়ে সেই অনশন কর্মসূচি শনিবার অষ্টম দিনে পড়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন কর্মসূচি যখন সংবাদ শিরোনামে, প্রায় একই সময়ে দিল্লিতেও চলছে অনশন। কলকাতায় দাবি উঠছে ‘বিচার চাই’। দিল্লিতেও সেই রকম উঠছে কিছু ‘চাই’-এর দাবি। ‘রাজ্য চাই’ দাবিতে দিল্লিতে অনশন চালাচ্ছেন জলবায়ু- আন্দোলনকর্মী সোনম ওয়াংচুক।
সাত দিন পার হতে চলল, অনশনে বসে রয়েছেন ওয়াংচুক। গত রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসেছেন তিনি। শনিবার সেই অনশনের সপ্তম দিন। জুনিয়র ডাক্তারেরা অনশন শুরু করেছিলেন ৫ অক্টোবর থেকে। ৬ অক্টোবর থেকে অনশনে বসেছিলেন আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতো। যিনি অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। যে দিন অনিকেত অনশনে বসেন, সেই দিন থেকেই লাদাখ সম্পর্কিত দাবিদাওয়া নিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসেছেন ওয়াংচুক।
অনশন শুরুর পর থেকে নুন জলের উপরেই রয়েছেন তিনি। শারীরিক ভাবে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন ওয়াংচুক। নিজের সমাজমাধ্যমের পাতাতেই এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, জ্বর জ্বর ভাব, পেটের সমস্যার কথা। প্রতিদিন চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক পরীক্ষা করছেন। রক্তচাপ কেমন রয়েছে তা সময়ে সময়ে নজর রাখা হচ্ছে। যদিও নিজের দাবিতে এখনও অটল রয়েছেন ওয়াংচুক।
প্রথমে দিল্লির যন্তর মন্তরের সামনে ধর্নায় বসতে চেয়েছিলেন বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’ ওয়াংচুক। কিন্তু সেই ধর্নায় অনুমতি না পাওয়ায় দিল্লিতে লাদাখ ভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে বসেছেন তিনি। যাঁরা ‘লাদাখ বাঁচাও’ আন্দোলনে তাঁদের দাবিকে সমর্থন করেন, তাঁদেরও ১৩ অক্টোবর এক দিনের জন্য প্রতীকী অনশনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সোনম।
লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই লড়ছেন সোনম। তাঁর দাবি লাদাখকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবি নিয়ে কেন্দ্র আলোচনা করুক। লাদাখকে সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হোক। লাদাখের জন্য একটি পৃথক পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন করা হোক। সেই সঙ্গে লেহ এবং কার্গিল জেলার জন্য পৃথক পৃথক লোকসভা আসনের বন্দোবস্ত করা হোক। এমনই নানা দাবি নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন তিনি।
সেই দাবিগুলিকেই আবার দিল্লির দরবারে পৌঁছে দিতে অনুগামীদের নিয়ে লেহ থেকে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা করেছেন তিনি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দিল্লির সিঙ্ঘু সীমানার কাছে দিল্লি পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে অবশ্য ২ অক্টোবর রাতে আবার ছেড়ে দেওয়া হয় সোনমকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
এর আগেও একাধিক বার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনশনে বসেছিলেন ওয়াংচুক। চলতি বছরের মার্চেও ২১ দিন অনশন চালিয়েছিলেন তিনি। তার আগে গত বছরেও অনশনে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু কোনও বারই বিশেষ সুরাহা হয়নি। এমন অবস্থায় অক্টোবরের শুরুতে ফের একবার অনশনে বসেছেন তিনি। এক এক সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত। অনশনস্থলে বসেই ওয়াংচুকের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।