প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, ‘‘বিচারপতিরা টেক-স্যাভি (প্রযুক্তিতে সড়গড়) নন বলে বিচারের প্রত্যাশায় অপেক্ষা করা মানুষগুলোর বোঝা বাড়ানো চলে না।’’ —ফাইল চিত্র।
হাই কোর্ট গুলিতে জমে আছে শয়ে শয়ে মামলা। তাই আদালতে বসে কিংবা ভার্চুয়াল মাধ্যমে, মামলাগুলোর দ্রুত শুনানি হোক। হাই কোর্টের বিচারপতিদের কাছে এমনই আবেদন রাখলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, ‘‘বিচারপতিরা টেক-স্যাভি (প্রযুক্তিতে সড়গড়) নন বলে বিচারের প্রত্যাশায় অপেক্ষা করা মানুষগুলোর বোঝা বাড়ানো চলে না।’’ শনিবার ভার্চুয়াল শুনানি চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিচারপতিদের কাছে আবেদন রাখলেন তিনি। আবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে ‘সতর্ক’ করতেও শোনা গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে।
করোনা আবহে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শুরু হয় অনলাইনে শুনানি প্রক্রিয়া। এখন হাই কোর্টের এজলাসে যেমন কোনও মামলার শুনানি হচ্ছে, তেমনই ভার্চুয়াল মাধ্যমেও মামলা শুনছেন বিচারপতিরা। এই ধারা যাতে বজায় থাকে তার আবেদন রাখলেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। শনিবার তিনি ওড়িশায় একটি আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত ওই আলোচনায় আইনের দরবারে প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে বলতে শুরু করেন তিনি। প্রধান বিচারপতির কথায়, ‘‘কিছু হাই কোর্টে ভিডিয়ো কনফারেন্সে শুনানির ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার সব রকম পরিকাঠামো এখনও অটুট আছে। এখন প্রশ্ন হল, আমরা কি সবাই এই প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারি?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি অনেক জনস্বার্থ মামলা দেখি যেখানে আইনজীবীরা বলছেন হাইব্রিড শুনানি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সমস্ত হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আমার আবেদন, দয়া করে ওই পরিকাঠামো ভেঙে ফেলবেন না। ওটা শুধুমাত্র করোনা পরিস্থিতির জন্য সীমাবদ্ধ রাখবেন না। করোনা পরিস্থিতির বাইরেও প্রযুক্তির ব্যবহার করুন।’’
অনলাইন শুনানিতে যে নানা রকম বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে, তা নিয়েও মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তুলে ধরেন পাটনা হাই কোর্টে চলা একটি মামলায় আইএএস অফিসারের পোশাকের জন্য তাঁকে বিচারপতির ভর্ৎসনার প্রসঙ্গও। বলেন, ‘‘কিছু মজার ভিডিয়ো সামনে চলে আসে। এগুলো আমাদের ঠিক করতে হবে। কারণ, কোর্ট রুম হল গুরুতর আলোচনার জায়গা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর ব্যবহার নিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান আগামিদিনে এর ব্যবহার আদালতেও হবে। সেগুলো কার্যকর হয়ে গেলে সাজা দেওয়ার মতো বিষয়েও প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে বিচারপতিদের।
তিনি এ-ও বলেন, এআই সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ এবং সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে ১০ হাজার বা ১৫,০০০ রেকর্ড রাখা সম্ভব। কিন্তু সেই সব নথি সব কি এক জন বিচারপতি পুরোটা মনে রাখতে পারবেন? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দৌলতে সেই সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাচ্ছে।