গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে যে মামলাগুলি দায়ের হয়েছে, সে ব্যাপারে তাদের কী বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারকে তা জানাতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। তবে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ নতুন আইনের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। বুধবার বেঞ্চ বলেছে, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।’’
নতুন আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যেই ৬০টি মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এ দিন সেগুলির সংক্ষিপ্ত শুনানিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিস দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানাতে। শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে ২২ জানুয়ারি। ওই দিনই শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রকে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ তুঙ্গে ওঠার প্রেক্ষিতে ওই আইনের উপর স্থগিতাদেশ জারির একের পর এক আর্জি জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। সেই সব আর্জির কোনওটি কোনও ব্যক্তির। কোনওটি কোনও রাজনৈতিক দলের। নতুন আইনের উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ, অসমে বিজেপি জোট সরকারের শরিক দল অসম গণ পরিষদ (অগপ) এবং ডিএমকে। কংগ্রেসের তরফে প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশও একই আর্জি জানিয়েছেন শীর্ষ আদালতে।
নতুন আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যে সব মামলা দায়ের হয়েছে, তাদের প্রায় সবক’টিরই দাবি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের মূল কাঠামোটাকেই অস্বীকার করেছে। ধর্ম কখনওই নাগরিকত্ব নির্ধারণের ভিত্তি হতে পারে না। স্বাধীনতার পর বিভিন্ন রাজ্য গঠনের সময়েও ধর্মকে নয়, গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল ভাষাকেই।
নতুন আইন নিয়ে সংসদে বিতর্কের সময়েও একই কথা বলেছিলেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা বলেছিলেন, ‘‘এর ফলে সংবিধানের মর্মমূলেই আঘাত করা হল।’’ তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছিলেন, ‘‘এটা তো একেবারে নাৎসিদের মতো কাজ।’’