প্রতীকী ছবি।
লাদাখের সেনা ঘাঁটিগুলির সাপ্লাই লাইন আরও মজবুত করতে এ বার চিনের নজর তিব্বতে। স্বশাসিত এই অঞ্চলে বিপুল সামরিক ও সাধারণ নির্মাণের প্রমাণ ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। শুধু তাই নয়, অরুণাচল এবং ভূটানের বিতর্কিত সীমান্ত অঞ্চলেও প্রচুর নির্মাণ করেছে বেজিং। বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্তে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হলে যাতে দ্রুত ‘ফরওয়ার্ড বেস’-এ রসদ ও সামরিক অস্ত্রশস্ত্র পাঠানো যায়, তার জন্য়ই এমন কৌশল নিয়েছেন শি চিনফিং।
সর্বশেষ উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, তিব্বতের বিভিন্ন বড় শহর এবং সীমান্ত এলাকার সেনা ঘাঁটিগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিপুল উন্নতি ঘটিয়েছে। লাসা বিমানবন্দরে তৈরি করেছে সামরিক পরিকাঠামো। ভূমি থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, আকাশ-সুরক্ষা প্রযুক্তি, বায়ু সেনার সহযোগী এয়ার বেস, এবং ১০০টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার রাখার জন্য অত্য়াধুনিক শেড তৈরি হয়েছে, যা ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে।
কিন্তু তার চেয়েও নয়াদিল্লির উদ্বেগ বেশি বেড়েছে জিনজিয়াং প্রদেশের হোটান বায়ুসেনা ঘাঁটিতে গত কয়েক মাসে পরিকাঠামো, প্রযুক্তি ও সামরিক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে বিপুর উত্তরণ ঘটিয়েছে চিন। চিনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের এই ঘাঁটি লাদাখে বায়ুসেনার অপারেশনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি টুইটারেও এই সংক্রান্ত ছবি ও খবর প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রানওয়ে, গোলাবারুদের গুদাম ও সাহায্যকারী পরিকাঠামো তৈরি। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত ভাবেও বিপুল পরিবর্তন করেছে চিনা বাহিনী। উপগ্রহ চিত্র থেকে স্পষ্ট, অন্তত পাঁচটি নতুন বাঙ্কার তৈরি হয়েছে এই সেনা ঘাঁটিতে।
গত বছরের মে মাসের গোড়ায় স্থিতাবস্থা নষ্ট করে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং লেক, গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর বিপুল সেনা মোতায়েন বাড়িয়ে দেয় চিন। সেনা ও রসদ মজুত বাড়িয়ে দেয় ভারতও। তার জেরে দু’দেশের সেনার মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের সেনার মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তার পর সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে দফায় দফায় আলোচনার পর জটিলতা কমেছে। কিন্তু তার পরেও বেজিং যে আগ্রাসী মনোভাব থেকে বিন্দুমাত্র পিছিয়ে আসেনি, সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রে ফের তার প্রমাণ মিলল।