ছবি: রয়টার্স।
আপার সুবনসিরি জেলার নাচো সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছ থেকে ‘অপহৃত’ অরুণাচলের পাঁচ তরুণ যে চিনা সেনার জিম্মায় রয়েছে তা শেষ পর্যন্ত মেনে নিল চিন। অরুণাচলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী কিরেণ রিজিজু আজ এ কথা জানিয়েছেন। তিনি টুইট করে জানান, ভারতীয় সেনা নিখোঁজ অরুণাচলি তরুণদের খোঁজ চেয়ে হটলাইনে চিনা সেনাকে বার্তা পাঠিয়েছিল। চিনের তরফে তার জবাব এসেছে। পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) হটলাইন মারফত জানিয়েছে, ওই চিনা তরুণরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে চিনের দখলে থাকা ভূখণ্ডে চলে গিয়েছিলেন। আপাতত তারা পিএলঅ-র জিম্মায় রয়েছে। রিজিজু জানান, ওই পাঁচ জনের হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। পরে ভারতীয় সেনাও একই কথা জানায়।
গত কাল চিনের তরফে দাবি করা হয়েছিল, তাদের কাছে অরুণাচলি তরুণদের অপহরণের ব্যাপারে কোনও খবর নেই। সঙ্গে তারা বলে, অরুণাচলপ্রদেশ বলে ভারতের কোনও রাজ্যের অস্তিত্বই তারা মানে না। ওই এলাকা দক্ষিণ তিব্বতের অংশ। অরুণাচলপ্রদেশ ছাত্র সংগঠনের সভাপতি হাওয়া বাগাং এর প্রতিক্রিয়ায় আজ বলেন, “অরুণাচলের মানুষ মনেপ্রাণে ভারতীয়। চিন যেন অরুণাচলে দখলদারির দাবি থেকে বিরত থাকে।” পাঁচ জনের মুক্তির বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। সাংসদ গৌরব গগৈ অবিলম্বে চিনের সঙ্গে কথা বলে পাঁচ যুবক নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠি পাঠিয়েছেন।
পাঁচ তরুণের বিষয়ে পুলিশের কাছে অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি পরিবার। কিন্তু তাঁদের বিষয়ে অনেক রকম বিষয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে। অপহৃত এক তরুণ সেনার মালবাহক বলে তাঁর ভাই দাবি করেছিলেন। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এটা সত্যি নয়।
অল আপার সুবনসিরি ডিস্ট্রিক্ট স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বলেছে, আসল ঘটনা না-জেনে কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকাই বাঞ্ছনীয়। ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ইয়াদে নাটাম এ দিন বিবৃতি দিয়ে জানান, প্রকৃত ঘটনা জানতে দলের মুখপাত্র দাদু পাদিংকে ওই গ্রাম ও ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। তিনি ফিরে জানান, গ্রামের তরুণরা শিকারে গিয়েছিলেন। সেনার সঙ্গে নয়। আদৌ এটা অপহরণ, নাকি ভুল করে তাঁরা ও-পারে চলে গিয়েছেন, তা নিয়েও না-জেনে মন্তব্য ঠিক হবে না। কারণ, তাতে তাঁদের বিপদ বাড়াতে পারে। আপার সুবনসিরিতেই আসাপিলা সেক্টর থেকে চিনা সেনা গত ১৯ মার্চ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে চিনের দিকে যাওয়া এক যুবককে আটক করেছিল। ৭ এপ্রিল তাঁকে ফেরত দেয় তারা। ওই সব এলাকার পাহাড়-জঙ্গলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বোঝার উপায় থাকে না। তাই শিকার করতে যাওয়া ব্যক্তিরা প্রায়ই ভুল করে চিনের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়েন। আবার চিনা সেনাও ভারতের সীমান্তের ভিতরে চলে আসে।