গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ক্যানসার আক্রান্ত মাকে ভুল ওষুধ দিয়েছেন চিকিৎসক! যার জেরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা! খবর পাওয়া মাত্রই হাসপাতালে গিয়ে ওই চিকিৎসককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দিলেন ছেলে। এলোপাথাড়ি কোপ দেওয়া হয়েছে চিকিৎসকের মুখে-বুকে-পেটে। বুধবার সকালে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে ওই ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে ক্যানসার আক্রান্ত ওই রোগিণীর ছেলেকে।
বঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডের পর হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকেরা। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও উঠেছে। চিকিৎসক-নার্সদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শীর্ষ আদালত টাস্ক ফোর্সও গঠন করেছিল। সেই টাস্ক ফোর্স সম্প্রতি আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তার মধ্যেই চেন্নাইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
চেন্নাইয়ের কলাইনার সেন্টেনারি হাসপাতালের ওপিডি বিভাগে ঘটনাটি ঘটেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আক্রান্ত চিকিৎসক নিজে হৃদ্রোগী। তাঁর বুকে পেসমেকার রয়েছে। তাঁর কপালে ও কানেও ছুরি দিয়ে কোপ দেওয়া হয়েছে। আপাতত আইসিইউ-তে ভর্তি করানো হয়েছে চিকিৎসককে। হাসপাতালের ডিরেক্টর এল পার্থসারথি বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসকের শরীরের নানা জায়গায় আঘাত লেগেছে। সব কিছু ভাল করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক।’’ অন্য দিকে, ওই চিকিৎসকের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা সুব্রহ্মণ্যম। যদিও গোটা ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে চাননি তিনি।
চিকিৎসকের উপর হামলার ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘চিকিৎসকেরা যে পরিষেবা দেন, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করা হবে।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, অভিযুক্ত যুবকের মা গত মে মাস থেকে হাসপাতালে ভর্তি। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়েছে শুনে বুধবার তিন বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালে যান ওই যুবক। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, রিসেপশন থেকে একটি স্লিপ নিয়ে মায়ের চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর ঘরে গিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেখানে ওই চিকিৎসকের উপর হামলা চালান অভিযুক্ত যুবক। ওই ঘটনার পর হাসপাতাল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু হাসপাতালের কর্মীরা তাঁকে ধরে ফেলেন। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে হাসপাতালে আংশিক কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন। তবে জরুরি বিভাগ খোলা থাকবে বলেই জানানো হয়েছে তাদের তরফে।