Assam

Assam-Mizoram Border Clash: অসমে বিক্ষোভ, বিতর্কিত এলাকায় নিরপেক্ষ বাহিনী

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২১ ০৭:২১
Share:

অসম-মিজোরাম সীমানায় সংঘর্ষ। ছবি পিটিআই।

মিজোরাম সীমানায় গুলিচালনার ঘটনায় অসম পুলিশের আরও এক জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে হাবিলদার শ্যামপ্রসাদ দোষাদ-এর। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬।

Advertisement

সীমানা-সংঘর্ষের পরে অসম-মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। করোনা সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসায় মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা আজ নিভৃতবাসে চলে গিয়েছেন। ফলে ওই বৈঠক স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে আজ। তবে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব দুই রাজ্যের মুখ্যসচিব ও ডিজিপিদের সঙ্গে প্রথমে আলাদা করে ও পরে একসঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে যোগ দেন সিআরপি-র ডিজি কুলদীপ সিংহ। স্থির হয়েছে, অসমের লায়লাপুর ও মিজোরামের ভাইরেংটির মধ্যবর্তী বিতর্কিত ৪ কিলোমিটার এলাকায় আর দুই রাজ্যের পুলিশ বা বাহিনী নয়, এ বার থেকে শুধু নিরপেক্ষ কোনও বাহিনীই মোতায়েন থাকবে। সেই বাহিনী বাছবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এবং তারা সরাসরি কেন্দ্রের অধীনে কাজ করবে। উভয় রাজ্য এ নিয়ে সমঝোতা পত্র তথা মউ-য়ে সই করেছে।

মিজোরামের বিভিন্ন সংগঠনের জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গাকে এখনই অসমের সঙ্গে বৈঠকে না-বসার পরামর্শ দিয়েছে৷ ১৮৭৫-এর সীমানা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করলেই ওই বৈঠক হতে পারে বলে জানিয়েছে তাঁরা৷ প্রশ্ন উঠেছে, কোয়রান্টিন হয়তো অজুহাত, ওই পরামর্শেই অমিত শাহের বৈঠক এড়িয়ে গেলেন না তো জোরামথাঙ্গা?

Advertisement

এআইসিসি-র একটি প্রতিনিধি দল আজ মিজোরাম সীমানা এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের অনেকটা আগেই আটকে দেয়। শিলচরে ফিরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরা বলেন, “বিরোধী দলের দায়িত্ব বিপন্নদের কথা জানা। অসম সরকার মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারছে না, সে কথা বিরোধী নেতাদের কাছে বলতেও দিচ্ছে না।” কংগ্রেস নেতারা দোষারোপ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মাকে। দু’জনেরই ইস্তফা চান তাঁরা। মিজোরামের সঙ্গে এক সুরে হিমন্তকে দুষছেন উত্তর-পূর্বের পাঁচ রাজ্যের যুব কংগ্রেস সভাপতিরাও। যৌথ প্রেস বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, “কয়েক বছর ধরেই অসম প্রতিবেশী রাজ্যগুলির জমি দখল করছে। এর মাত্রা বেড়ে গিয়েছে হিমন্ত মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর।”

কংগ্রেস সাংসদ প্রদ্যোত বরদলৈয়ের আশঙ্কা, এই ঘটনার পেছনে অন্য কোনও শক্তির হাত রয়েছে। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। অসম মন্ত্রিসভা সোমবারের ঘটনার তদন্তে দুই সদস্যের একটি পুলিশ কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশনের কার্যকাল তিন মাস।

অসম পুলিশের ৬ জওয়ানের মৃত্যুর প্রতিবাদে বরাক উপত্যকায় আজ ১২ ঘণ্টার শান্তিপূর্ণ বন্ধ হয় বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের ডাকে। হাইলাকান্দিতে মিজোরামের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধের ডাক দিয়েছে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি। মিজোরামগামী সড়ক ও রেললাইনে অবরোধ করে আছেন তাঁরা। ক্ষুব্ধ জনতা বদরপুর-ভৈরবী সেকশনের মাহমদপুর এবং জামিরা এলাকায় রেললাইনের একাংশ উপড়ে ফেলেছে। অবরোধ চলছে কাছাড় জেলার ধলাই অঞ্চলেও।

বরাক-মিজোরাম সীমানায় অশান্তির মধ্যেই মেঘালয়ের রি-ভয় জেলা ও কামরূপের সংযোগস্থলে লংখুলি এলাকায় গিয়ে অসম পুলিশের মেঘালয় বিদ্যুৎ পর্ষদের বিদ্যুৎস্তম্ভ উপড়ে ফেলা ও কাজ থামিয়ে দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা চরমে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, “সীমান্ত সমস্যা মেটানো নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখনই জোর করে পুলিশ পাঠিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করা অর্থহীন।” অগস্টেই দু’পক্ষের মধ্যে দ্বিতীয় সীমানা বৈঠক হওয়ার কথা।

মেঘালয়ের বিরোধী দলের চিফ হুইপ পি টি সাওকমি দাবি করেন, “উত্তর-পূর্ব জুড়ে নেডা জোটের সরকার গড়ার পরে সীমানা সমস্যা মেটার বদলে ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। তার জন্য মূলত দায়ী নেডা চেয়ারম্যান হিমন্তবিশ্ব শর্মার সরকারের দাদাগিরি ফলানোর চেষ্টা।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement