প্রতীকী ছবি।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিলে সায় নেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের। তবে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অন্তর্গত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন। আগামী ১০ মে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চে ফের মামলার শুনানি হবে।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা মামলার শুনানি-পর্বে বেণুগোপাল সাম্প্রতিক কালে কয়েকটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অপপ্রয়োগের কথাও বলেছেন। তাঁর অভিযোগ, মহারাষ্ট্রে হনুমান চালিশা পাঠের জন্যও অযৌক্তিক ভাবে ১২৪(এ) ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। যদিও কৃষক আন্দোলন-পর্বে হরিয়ানায় বিজেপি নেতা তথা ডেপুটি স্পিকারের গাড়ির কাচ ভাঙার জন্য পুলিশ ১০০ জন কৃষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।
রাষ্ট্রদ্রোহ আইন তথা ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারীদের মধ্যে রয়েছে এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া, মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ‘কমন কজ’, রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ শৌরি, প্রাক্তন মেজর জেনারেল এস জি ভোম্বাটকেরে, সাংবাদিক প্যাট্রিশিয়া মুখিম ও অনুরাধা ভাসিন, ব্যঙ্গচিত্রী অসীম ত্রিবেদী-সহ আরও অনেকেই। আবেদনকারীদের যুক্তি, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪(এ) ধারা সংবিধানের ১৯(১)(এ), ১৪ এবং ২১ এই তিন অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
সরকার পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। সাংবিধানিক পদাধিকার বলে আদালতকে সাহায্য করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল বেণুগোপাল। প্রসঙ্গত, গত বছরই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন তুলেছিল, যে আইন ব্রিটিশ শাসকেরা ‘মহাত্মা গাঁধী, বাল গঙ্গাধর তিলকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, সেই ঔপনিবেশিক আইন স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও টিকে থাকে কী করে?’ সরকারের হাতে এই আইনের অপব্যবহারের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘রাষ্ট্রদ্রোহ আইন হল কাঠের মিস্ত্রির হাতে করাত তুলে দেওয়ার মতো! কাঠের বদলে বন কেটে আনে সে!’’