COVID19

Covid 19: মাঝারি উপসর্গে নিয়ম বদলাল বিচ্ছিন্নবাসের

যাঁদের মাঝারি উপসর্গ রয়েছে, শারীরিক অসুবিধা পুরো দূর না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিচ্ছিন্নবাস চালিয়ে যেতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:২৫
Share:

অবিচল :বরফ ঠেলেই করোনার প্রতিষেধক নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। বুধবার মধ্য কাশ্মীরের বদগাম জেলার প্রত্যন্ত গ্রামে। পিটিআই

বিচ্ছিন্নবাসের নিয়মে সামান্য পরিবর্তন আনল কেন্দ্র। গত ৯ জানুয়ারি নতুন নিয়মে জানানো হয়েছিল, উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত কোভিড রোগীরা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার অন্তত সাত দিন পরে বিচ্ছিন্নবাস শেষ করতে পারবেন। এ বার সেই নিয়ম অপরিবর্তিত রাখা হলেও যাঁদের শরীরে মাঝারি মাত্রার উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাঁদের যত দিন না শারীরিক অসুবিধা পুরোপুরি দূর হচ্ছে, তত দিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ী বিচ্ছিন্নবাস চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

Advertisement

অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ে যে ভাবে প্রতিটি ঘরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে, তাতে কর্মরত জনসংখ্যা বা ‘ওয়ার্ক ফোর্স’-এ বড়সড় ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যেহেতু এ যাত্রায় যাঁরা সংক্রমিত হচ্ছেন তাঁদের অধিকাংশই উপসর্গহীন অথবা মৃদু উপসর্গযুক্ত হচ্ছেন, সেই কারণে তাঁদের দ্রুত কাজে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সাত দিনের বিচ্ছিন্নবাসের নতুন নিয়ম এনেছিল কেন্দ্র। এতে বলা হয়, উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গযুক্ত কোভিড রোগীরা নিজেদের বাড়িতেই চিকিৎসকের পরামর্শে বিচ্ছিন্নবাসে থাকতে পারবেন। পজ়িটিভ হওয়ার সাত দিন পরে তাঁদের বিচ্ছিন্নবাস শেষ হবে, যদি পরপর শেষ তিন দিন জ্বর না আসে এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা না থাকে। সে ক্ষেত্রে অষ্টম দিনে তাঁরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন বলে জানানো হয়েছিল নতুন নিয়মে।

আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই নিয়মে কোনও পরিবর্তন হয়নি। তবে মাঝারি উপসর্গের রোগীদের এ বার দু’টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রথমে মাঝারি মাত্রার উপসর্গ থাকলেও পরের দিকে যাঁদের জ্বর বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থাকছে না, কিংবা পরপর তিন দিন বাইরে থেকে দেওয়া অক্সিজেন ছাড়াই শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশের বেশি থাকছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বিচ্ছিন্নবাস শেষ করতে পারবেন। কত দিনে এঁদের বিচ্ছিন্নবাস শেষ হবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে সূত্রের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রেও যদি সাত দিনের মধ্যে ওই রোগী ‘সুস্থ’ হয়ে ওঠেন, তা হলে তিনিও উপসর্গহীনদের মতো সপ্তম দিনে বিচ্ছিন্নবাস শেষ করতে পারবেন। অন্য দিকে, পজ়িটিভ হওয়ার সাত দিন পরেও যাঁদের শারীরিক সমস্যা রয়ে যাচ্ছে কিংবা আলাদা করে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে, তাঁরা সব শারীরিক সমস্যা দূর হওয়ার আগে পর্যন্ত বিচ্ছিন্নবাস শেষ করতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক বললে তবেই তাঁদের বিচ্ছিন্নবাস শেষ হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল জানিয়েছেন। কো-মর্ডিবিডিটি থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্য কখন বিচ্ছিন্নবাস শুরু এবং শেষ হবে, সেই সিদ্ধান্ত চিকিৎসকই নেবেন।

Advertisement

দেশে ওমিক্রনের দাপটে সংক্রমণ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়লেও যাঁরা প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নিয়েছেন, তাঁরা তুলনামূলক ভাবে কম সংক্রমিত হচ্ছেন, অথবা কোভিডে আক্রান্ত হলেও তাঁদের শরীরে গুরুতর উপসর্গ কম দেখা যাচ্ছে বলে ফের দাবি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এ ক্ষেত্রে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরের বাসিন্দাদের উপরে নিউ ইয়র্ক স্টেট হেল্থ দফতরের করা একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ওই শহরে প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় প্রতিষেধক নেননি, গড়ে এমন ১৫৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু প্রতিষেধক নিয়ে প্রতি এক লক্ষে সংক্রমিত হয়েছেন গড়ে মাত্র ২২৩ জন। লব আগরওয়াল জানান, আমেরিকায় গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে করা এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রতিষেধক নিয়েছেন, এমন মানুষদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৭৮ শতাংশ কম।

আবার ওই সমীক্ষাই বলছে, প্রতিষেধক নেননি, এমন কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতি এক লক্ষে হাসপাতালে ভর্তির হার ৫৮.৩ শতাংশ। কিন্তু যাঁরা প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ওই হার মাত্র ৪.৬ শতাংশ। সমীক্ষা এ-ও বলছে যে, যাঁরা প্রতিষেধক নিয়েছেন, তাঁরা করোনা আক্রান্ত হলেও হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনা ৯০.২ থেকে ৯৫.৭ শতাংশ কমে যাচ্ছে। এই উদাহরণ দিয়ে লব বলেন, ‘‘ভারতের যে আট শতাংশ মানুষ এখনও প্রথম ডোজ় নেননি এবং যাঁদের দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার সময় পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁরা যেন দ্রুত টিকা নিয়ে নেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের সংক্রমণ এবং সংক্রমিত হলেও হাসপাতালে ভর্তির আশঙ্কা এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে।’’ নিউ ইয়র্কের তুলনা দিলেও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এখনও এ দেশে এমন কোনও সমীক্ষা করেনি বলেই স্বীকার করে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement