—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নিট এবং নেট নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ কেন্দ্রের। দেশের বিভিন্ন প্রবেশিকা এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বেনিয়ম এবং প্রশ্নফাঁস রুখতে নয়া আইন কার্যকর করার কথা ঘোষণা করল সরকার। নতুন এই পরীক্ষা আইন— পাবলিক এগ্জামিনেশন (প্রিভেনশন অব আনফেয়ার মিনস) অ্যাক্ট, ২০২৪ সংসদে পাশ হয়েছিল ফেব্রুয়ারি মাসেই। তবে নিট এবং নেট নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দিতেই সেই আইনের নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই এই আইন কার্যকর করা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। ধর্মেন্দ্র জানিয়েছিলেন, আইন মন্ত্রক ইতিমধ্যেই এই আইন সংক্রান্ত নিয়ম তৈরি করছে। এর এক দিন পরেই নতুন পরীক্ষা আইন কার্যকর করার কথা জানাল কেন্দ্র।
শুক্রবার কার্যকর হওয়া এই আইন অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস বা উত্তরপত্রে বেনিয়ম করতে গিয়ে ধরা পড়েন, তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ন্যূনতম তিন বছর জেল খাটতে হবে। সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাবাসের সাজা হতে পারে। সঙ্গে দিতে হতে পারে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা। যদি কোনও নিয়ামক সংস্থা বা আয়োজক সংস্থা পরীক্ষা প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি হচ্ছে জেনেও চুপ থাকে, তা হলে তাদের ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
পাশাপাশি, নিয়ামক সংস্থার কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক যদি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তা হলে তাঁর ন্যূনতম তিন বছরের সাজা হবে। সর্বাধিক ১০ বছরের জেল এবং ১ কোটি টাকার জরিমানা হতে পারে। আর যদি পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ বা আয়োজক সংস্থার তরফে কোনও ব্যক্তি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, তা হলে ন্যূনতম পাঁচ বছর এবং সর্বাধিক ১০ বছরের সাজা হতে পারে। সঙ্গে জরিমানা করা হতে পারে ১ কোটি টাকা।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’র উল্লেখ থাকলেও জানানো হয়েছে, তা কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারাগুলিই এই আইনের ক্ষেত্রে কার্যকর থাকবে। উল্লেখ্য, আগামী ১ জুলাই থেকে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ কার্যকর হওয়ার কথা।
প্রসঙ্গত, ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা নিট-এর পর গবেষণা করার জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষা নেট-এও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। নিটের প্রশ্নফাঁস নিয়ে কেন্দ্রের দিকে আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। তদন্ত চালাচ্ছে বিহারের আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা (ইএইউ)। অন্য দিকে, নেটের প্রশ্নফাঁসের তদন্তে নেমেছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে অনুমান করা হচ্ছে যে, পরীক্ষার দু’দিন আগে, অর্থাৎ রবিবারই ফাঁস হয় নেট প্রশ্নপত্র। ডার্ক ওয়েবে তা বিক্রি হয়েছে ছ’লক্ষ টাকায়। উল্লেখ্য, নিটকাণ্ডে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হলেও নেটকাণ্ডে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। দুই পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। সেই আবহেই এ বার পরীক্ষায় জালিয়াতি রুখতে নতুন আইনের নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্র।