বিশ্বের কনিষ্ঠতম অধ্যাপক হয়ে আগেই নজির গড়েছিল। এ বার আমেরিকার সর্বকনিষ্ঠ পড়ুয়া হিসাবে হাই স্কুল পাশ করেও ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে বাঙালি সুবর্ণ বারি।
কিন্তু হাই স্কুল পাশ না করেই কী ভাবে অধ্যাপনা করছে সুবর্ণ? হিসাব মিলছে না? মিলবেও না। কারণ, সুবর্ণকে ধরা হয় গড়পড়তা হিসাবের বাইরেই। কারণ, সে ‘বিস্ময় বালক’।
পরিবারের সঙ্গে আমেরিকায় থাকে সুবর্ণ। নিউ ইয়র্কের নাসাল কাউন্টির একটি হাইস্কুলের সর্বকনিষ্ঠ ‘গ্র্যাজুয়েট’ হতে চলেছে সে।
১২ বছর বয়সি সুবর্ণ ইতিমধ্যেই দু’টি বই লিখে ফেলেছে। কঠিন বৈজ্ঞানিক সূত্রের চটজলদি সমাধান করতে সিদ্ধহস্ত সুবর্ণের তুলনা হয় আইজ়্যাক নিউটন-অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের মতো বিজ্ঞানীদের সঙ্গে।
আগামী ২৬ জুন হাই স্কুলের ডিগ্রি হাতে পাবে সুবর্ণ। তবে ইতিমধ্যেই কলেজে ভর্তির ডাক পেয়ে গিয়েছে সে।
গণিত এবং পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য সুবর্ণকে পূর্ণ বৃত্তি দিচ্ছে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়।
সুবর্ণকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘বিশ্বের সবাইকে গণিত এবং বিজ্ঞান বুঝতে সাহায্য করতে চাই আমি। আমার লক্ষ্য এক জন অধ্যাপক হওয়া এবং প্রয়োজনে সকলকে সাহায্যের চেষ্টা করা।’’
২০১২ সালের ৯ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের প্রেসবিটেরিয়ান কুইন্স হাসপাতালে সুবর্ণের জন্ম।
সুবর্ণের বাবা রশিদুল এবং মা শাহেদা তার অনেক আগেই বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় চলে গিয়েছিলেন। রেফাত নামে এক দাদাও রয়েছে তার।
মাত্র ছ’মাস বয়সে কথা বলতে শুরু করেছিল সুবর্ণ। অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের জটিল সমস্যার সমাধান শুরু করে দু’বছর বয়সে।
সুবর্ণের অঙ্কের কঠিন ধাঁধা সমাধান করার বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই তাকে নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায় আমেরিকায়। ভিড় বাড়তে থাকে সুবর্ণের বাড়ির বাইরে।
আমেরিকার ছোট-বড় সংবাদমাধ্যমে একাধিক সাক্ষাৎকার নেওয়া হয় সুবর্ণের। ২০১৬ সালে নিউ ইয়র্কের সিটি কলেজের অধ্যাপক লিসা কোইকো গণিত এবং বিজ্ঞানে সুবর্ণের মেধার জন্য তাকে ‘এ যুগের আইনস্টাইন’ বলে অভিহিত করেন।
মাত্র চার বছর বয়সে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছ থেকে স্বীকৃতি পায় সুবর্ণ। ছ’বছর বয়সে সে স্বীকৃতি পায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
সুবর্ণ যে দু’টি বই লিখেছে, তার মধ্যে একটি ‘দ্য লাভ’। এই বইয়ে বিভিন্ন ধর্মের মেলবন্ধনের কথা লিখেছে সুবর্ণ। এই বই লিখে বিস্তর প্রশংসাও কুড়িয়েছে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে নোবেলজয়ী কৈলাস সত্যার্থীর কাছ থেকে ‘গ্লোবাল চাইল্ড প্রডিজি’ পুরস্কার পেয়েছে সুবর্ণ।
সুবর্ণ মাত্র আট বছর বয়সে মুম্বই ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেয়। তাকে নিয়ে তথ্যচিত্রও তৈরি হয়েছে।
তবে সুবর্ণকে নিয়ে বিশেষ মাতামাতি করতে নারাজ তার বাবা-মা। রশিদুল এবং শাহেদার মতে তাঁদের পুত্র অনন্য। সে সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। (এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় ভুলবশত সুবর্ণকে জন্মসূত্রে বাংলাদেশি লেখা হয়েছিল। সুবর্ণের জন্ম আমেরিকায়। বাঙালি হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই তার। আমরা ভুলটি সংশোধন করে নিয়েছি। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত এবং সুবর্ণ ও তার পরিবারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী)