ফাইল চিত্র।
মে-জুন মাসে খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় থাকা ৮০ কোটি গরিব মানুষকে বিনামূল্যে পাঁচ কেজি করে রেশন দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বার দীপাবলি পর্যন্ত সেই রেশন বিলি করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন।
জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরে বিরোধীদের প্রশ্ন, শুধু পাঁচ কেজি চাল-গমে কী লাভ হবে? কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ ও লকডাউনের জোড়া ধাক্কায় রুটিরুজি হারানো মানুষের সাহায্যে কেন্দ্র কেন নগদ অর্থসাহায্য ঘোষণা করছে না?
সোমবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী টিভি-র পর্দায় সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকার পাশাপাশি বিনামূল্যে রেশনের ঘোষণা করে বলেন, “মহামারির সময়ে সরকার গরিবের সমস্ত প্রয়োজনে, বন্ধুর মতো পাশে থাকছে। নভেম্বর পর্যন্ত দেশের মানুষ প্রতি মাসে মুফতে খাদ্যশস্য পাবেন। এর লক্ষ্য একটাই। আমার কোনও গরিব ভাই-বোনকে যাতে খালি পেটে শুতে না হয়।”
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা কতখানি সরকারের নিজস্ব সিদ্ধান্ত, আর কতটা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও গরিব মানুষের কাছে মোদীর ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা, প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্র ও সমস্ত রাজ্যকে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে রেশনের বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। তা ছাড়া কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে ব্যর্থতার দায় প্রধানমন্ত্রীকেই দিচ্ছেন বিরোধীরা। বিজেপি সেই ক্ষত মেরামতের চেষ্টায় মানুষকে সাহায্যের কথা বলতে শুরু করেছে।
গত বছর এপ্রিল থেকে লকডাউনের সময়েই কেন্দ্র ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’-য় ৮০ কোটি মানুষের জন্য বিনামূল্যে প্রতি মাসে মাথা পিছু ৫ কেজি রেশনের ঘোষণা করেছিল। এমনিতে খাদ্য সুরক্ষা আইনে ৫ কেজি করে চাল বা গম ২-৩ টাকা কেজি দরে মেলে। আরও ৫ কেজি বাড়তি নিখরচায় দেওয়ার ঘোষণা হয়। কিন্তু কারণ না দেখিয়েই নভেম্বরে প্রকল্প বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ বছর ফের কোভিডের ধাক্কা ও রাজ্যে রাজ্যে লকডাউনের জেরে মে-জুনে ফের সেই প্রকল্প চালু হয়েছিল। তবে গত বছরের মতো চাল-গমের পাশাপাশি ডাল মিলছিল না। ৩ জুন প্রকাশিত সরকারি হিসেবই বলছে, তখনও পর্যন্ত ৩০% মানুষ রেশন কার্ড থাকলেও মে মাসের রেশন পাননি। বিরোধীদের বক্তব্য, সরকারি গুদামে খাদ্যশস্য উপচে পড়ছে। সরকারের উচিত আরও বেশি করে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বিলি করা।