Project Tiger

স্বর্ণ জয়ন্তীতে বিদায় নিল ‘প্রোজেক্ট টাইগার’

দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং বাঘ বিশেষজ্ঞদের সিংহভাগই অবশ্য, বাঘ ও হস্তি ভিন্ন ধরনের দুই বন্যপ্রাণ প্রকল্পকে মিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে বনমন্ত্রকে বরাদ্দ ছাঁটাইয়ের সম্ভবনা দেখছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৩ ০৮:১০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

দেশে ব্যাঘ্রকুলে বিপুল বাড়-বৃদ্ধি ঘটলেও ‘মৃত্যু’ ঘটল ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পের! রবিবার, কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘প্রোজেক্ট টাইগার’ বা বাঘ সংরক্ষণে নিয়ামক এই প্রকল্পটি ‘রোল ব্যাক’ বা গুটিয়ে ফেলা হল। যা শুনে দেশের পরিচিত বাঘ বিশেষজ্ঞ বল্মীক থাপারের মন্তব্য, ‘‘প্রোজেক্ট টাইগারের মৃত্যু’-তে বাঘ সংরক্ষণে বনমন্ত্রকের উদাসীনতা স্পষ্ট হয়ে গেল!’’

Advertisement

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাঁর যুক্তি, ‘‘ব্যাঘ্র সংরক্ষণ প্রকল্পটি দেশের হস্তি সংরক্ষণ (প্রোজেক্ট এলিফ্যান্ট) প্রকল্পের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করবে। যার নয়া নামকরণ করা হয়েছে, বাঘ ও হস্তি সংরক্ষণ ডিভিশন।’’ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং বাঘ বিশেষজ্ঞদের সিংহভাগই অবশ্য, বাঘ ও হস্তি ভিন্ন ধরনের দুই বন্যপ্রাণ প্রকল্পকে মিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে বনমন্ত্রকে বরাদ্দ ছাঁটাইয়ের সম্ভবনা দেখছেন। বিশিষ্ট বন্যপ্রাণ গবেষক মিথিলেশ যোশী মনে করেন, ‘‘এর ফলে দেশের হাতি বা বাঘের সংরক্ষণই সুষ্ঠ ভাবে হবে না। প্রোজেক্ট টাইগার-এর বরাদ্দ টাকা প্রধানমন্ত্রীর সাধের চিতা পুনঃস্থাপন উদ্যোগে ঢালতেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত।’’

১৯৭৩ সালে প্রোজেক্ট টাইগার প্রকল্প চালু হওয়র সময়ে দেশে বাঘের সংখ্যা ছিল ২৯৯। পঞ্চাশ বছরে পা দেওয়া প্রোজেক্ট টাইগারের উদ্যোগে সেই সংখ্যা এখন ৩১৬৭। বিশ্বের ৭৫ শতাংশ বন্য-বাঘের ঠিকানা এখন এ দেশের বিভিন্ন ব্যাঘ্র প্রকল্পের এক্তিয়ারভূক্ত জঙ্গল। চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় বাজেটে প্রোজেক্ট টাইগারের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি করে ২৪৭৮ কোটি থেকে ৩০৭৯ কোটি টাকা করা হয়েছিল। তার তিন মাসেই মধ্যেই প্রোজেক্টটি তুলে দেওয়া হল কেন? প্রশ্ন তুলেছেন বাঘ বিশেষজ্ঞরা। বিশিষ্ট বাঘ বিশেষজ্ঞ এবং রাজ্যের বন-উপদেষ্টা কমিটির সদস্য বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এর ফলে বাঘ সংরক্ষণ যেমন ধাক্কা খাবে তেমনই পশ্চিমবঙ্গের মতো হাতি-উপদ্রুত রাজ্যও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কারণ, বাঘ না হাতি, কোন প্রাণীকে গুরুত্ব দিয়ে কত বরাদ্দ করা হবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে বাধ্য।’’ এ দিন দিল্লিতে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই তাই, এ ব্যাপারে ‘ন্যাশনাল বোর্ড অব ওয়াইল্ড লাইফ’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement