কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লোকসভায় দাঁড়িয়ে যে ভাবে সহজেই প্রায় বিশ হাজার ভারতীয় ছাত্রকে দেশে পড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন, বিষয়টিকে আদৌ ততটা সহজ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ফাইল চিত্র।
লোকসভায় বিরোধী সাংসদদের প্রশ্নের জবাবে সোমবার কেন্দ্র জানালো, ইউক্রেন থেকে পাঠ্যক্রম অসমাপ্ত রেখে ফিরে আসা ছাত্রছাত্রীরা যাতে ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে পারেন, সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা করবে সরকার।
বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছিল নানা মহলে। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধীরাও স্থির করেছিলেন বিষয়টিকে সংসদের চলতি অধিবেশনে সামনে নিয়ে আসা হবে। সেই মতো কংগ্রেসের কে সি বেণুগোপাল, তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তনু সেন, টিডিপি-র রবীন্দ্র কুমারেরা আজ সংসদে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে এই নিয়ে আজই প্রথম মুখ খুলতে দেখা গেল মোদী সরকারকে।
কংগ্রেসের লোকসভার সাংসদ গৌরব গগৈর প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, “আমরা যখন ওদের ফিরিয়ে আনতে পেরেছি, আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, সরকার সব ধরনের ব্যবস্থার কথা ভাবছে। তারা যাতে ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে পারে, সে জন্য যা যা করা দরকার তা করছে।” একই সঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, “এখন প্রয়োজন তাদের এই ধাক্কা থেকে বার করে আনা। আমরা সবাই সেই কাজেই ব্যস্ত।“ সরকারের ‘অপারেশন গঙ্গা’র প্রসঙ্গ তুলে ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেন, “১৩০ কোটি ভারতীয় সম্মিলিত প্রজ্ঞারই প্রতিফলন ঘটেছে ওই অপারেশনে।” বিরোধীদের কিছুটা খোঁচা দিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানের ব্যঙ্গোক্তি, “আমি তো আশা করছিলাম কংগ্রেস এবং সদনের অন্যান্য বিরোধীরা অপারেশন গঙ্গার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাবেন।”
তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লোকসভায় দাঁড়িয়ে যে ভাবে সহজেই প্রায় বিশ হাজার ভারতীয় ছাত্রকে দেশে পড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন, বিষয়টিকে আদৌ ততটা সহজ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বলা হচ্ছে, বর্তমানে দেশে প্রায় ৮৫ হাজার মেডিক্যাল আসন রয়েছে। দেশের মোট আসনের এক-চতুর্থাংশ পড়ুয়াকে বর্তমান ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব নয়, এমনটাই ঘরোয়া ভাবে জানিয়েছে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)। স্বাভাবিক ভাবেই কোন ভরসায় আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই আশ্বাস দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বরং এনএমসি আশা করে রয়েছে, যুদ্ধ শেষ হয়ে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হলে পড়ুয়ারা আবার ফিরে যাবেন। তা না হলে, দেশের ভিতরে কী ভাবে এই বিপুল সংখ্যক পড়ুয়াকে মেডিক্যাল পড়ানোর জন্য রাতারাতি পরিকাঠামো তৈরি করা সম্ভব হবে, তা কিন্তু আজ স্পষ্ট করেনি সরকার।
যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তাগত ত্রাসের যথেষ্ট কারণ রয়েছে নয়াদিল্লির। মঙ্গলবার সংসদে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে বিবৃতি দেবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।