ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ আটটি রাজ্যের কাছ থেকে সম্মতি না মেলায় অনেক মামলায় সিবিআই তদন্ত আটকে রয়েছে। তদন্ত ব্যাহত হচ্ছে বিভিন্ন আদালতের স্থগিতাদেশের কারণেও।
সিবিআই ডিরেক্টরের পেশ করা হলফনামা থেকে এই দু’টি বিষয় আজ উঠে এসেছে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি এস কে কউল এবং এম এম সুন্দরেশকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ মনে করে, এটা কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নয়। অনেকগুলি ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সংক্রান্ত তদন্ত আটকে থাকায় দেশের অর্থনীতির উপরেও তা চাপ ফেলছে। বেঞ্চ জানিয়েছে, তদন্ত থমকে থাকার প্রশ্নটি প্রধান বিচারপতির কাছে তোলা হবে প্রয়োজনীয় নির্দেশের জন্য।
আগে সিবিআই চাইলে যে কোনও রাজ্যে তদন্ত করতে পারত। রাজ্যগুলির তরফে এর জন্য ‘সাধারণ সম্মতি (জেনারেল কনসেন্ট)’ দেওয়া ছিল দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাব্লিশমেন্ট (ডিএসপিই) আইনের ৬ নম্বর ধারায়। পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, কেরল, পঞ্জাব, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ় ও মিজোরাম। এই আটটি রাজ্য সেই ‘সাধারণ সম্মতি’ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এই রাজ্যগুলিতে তদন্তের জন্য মামলা ধরে ধরে অনুমতি নিতে হয় সিবিআইকে। সিবিআই হলফনামায় জানিয়েছে, ২০১৮ থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত তারা মোট ১৫০টি মামলায় তদন্তের অনুমতি চেয়েছে এই আট রাজ্যের কাছে। কিন্তু ৭৮ শতাংশ আবেদনই ঝুলে রয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীর হাই কোর্টের একটি রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করতে সিবিআই সময় নিয়েছিল ৫৪২ দিন। এই দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে শুনানির সূত্রে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে তাদের কাজকর্মের খতিয়ান জানিয়ে একটি হলফনামা দিতে বলেছিল। আবেদনে বিলম্বের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ হাজার টাকা আদায়েরও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। পাশাপাশি, সিবিআই ডিরেক্টরের দেওয়া হলফনামা খতিয়ে দেখে, এত তদন্ত আটকে থাকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত।
বেঞ্চের বক্তব্য, “ঝুলে থাকা ৭৮ শতাংশ তদন্তের মধ্যে রয়েছে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি, প্রতারণা, জালিয়াতি ও তহবিল নয়ছয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ। বেশির ভাগই বিপুল অঙ্কের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি সংক্রান্ত। দেশের অর্থনীতিতে এটা প্রভাব ফেলছে। নিশ্চিত ভাবেই এটা কাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নয়।”
সিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্তেদের দোষী সাব্যস্ত হওয়ার হার জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সিবিআই হলফনামায় জানিয়েছে, বর্তমানে এই হার ৬৫-৭০ শতাংশ। ২০১৯-এ ৬৯.১৯ শতাংশ ও ২০২০-তে ৬৯.৮৩ শতাংশ অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ২০২২-এ ৭৫ শতাংশে পৌঁছনোর লক্ষ্য রয়েছে তাদের।