(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিনেশ ফোগাট (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
মাত্র ১৬ দিন। এই ১৬ দিনই আপাতত ‘কাঁটা’ কুস্তিগির বিনেশ ফোগাটের রাজ্যসভায় মনোনয়ন পাওয়ার পথে! এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় পাঠানো সম্ভব নয় তাঁকে। সরকার চাইলেও মাত্র চার দিনের গেরোয় তা আটকে যাবে। ওই দাবিতে প্রথম সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই টুইট করে বলেছিলেন, বিনেশকে রাষ্ট্রপতির মনোনীত সাংসদ করে রাজ্যসভায় পাঠানোর জন্য সমস্ত দল একযোগে প্রস্তাব নিক। তার পরে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাকেত গোখলে এবং দোলা সেনও ওই দাবি তোলেন।
প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে বিনেশের বাদ পড়া কেন্দ্র করে উত্তাল গোটা দেশ। ক্রীড়ামহল এবং রাজনীতি যখন আলোড়িত, তখন কেন্দ্রের কাছে বিনেশকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত সাংসদ করার প্রস্তাব দেন তৃণমূলের অভিষেক। রাজ্যসভা সাংসদ করার প্রস্তাব দেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী নেতৃত্ব। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেকের প্রস্তাব ছিল, সর্বসম্মতিক্রমে ঐকমত্যে পৌঁছে বিনেশকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হোক অথবা তাঁকে রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য করা হোক রাজ্যসভায়। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা থেকে শুরু করে একাধিক কংগ্রেসনেতা দাবি করেছেন, বিনেশকে রাজ্যসভায় সাংসদ করা হোক।
বিরোধীদের এই দাবি সরকার পক্ষ মেনে নিলেও একটি নিয়মের গেরোয় তা অন্তত ১৬ দিন আটকে যাবে। রাজ্যসভায় সাংসদ হতে গেলে কাউকে ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সী হতে হবে। সেই নিয়মেই আটকে যাবেন বিনেশ। তাঁর বয়স এখন ২৯ বছর। আগামী ২৫ অগস্ট তিনি ৩০ বছরে পা রাখবেন। অর্থাৎ,
রাজ্যসভায় ফাঁকা ১২ আসনে ভোট করানোর ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে তার সঙ্গে বিনেশের মনোনীত সাংসদ হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর রাজ্যসভার ভোটগ্রহণ। খালি আসনে প্রার্থী হিসাবে মনোয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২১ অগস্ট। সংসদের বাইরে কংগ্রেস বিনেশকে রাজ্যসভায় লড়ানোর যে দাবি তুলেছে, তা সম্ভব হবে না। কারণ, বিনেশের জন্মদিনের মাত্র চার দিন আগে ২১ তারিখে এই পর্বে রাজ্যসভায় মনোয়ন জমা দেওয়ার সময়য়ীমা শেষ হচ্ছে। তবে অভিষেকের দাবি অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির মনোনীত সাংসদ হতে গেলে নির্বাচনের কোনও প্রয়োজন নেই। যে কোনও সময়ে তা করা যেতে পারে। যদিও সে ক্ষেত্রেও বিনেশের বয়স ৩০ বছর হওয়া বাঞ্ছনীয়। অর্থাৎ ২৫ অগস্টের পর রাষ্ট্রপতির মনোনয়নে রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে সংসদে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিনেশের কোনও বাধা নেই।
বুধবার রাতে মহিলাদের কুস্তির ৫০ কেজি বিভাগে সোনার পদকের জন্য লড়াই করার কথা ছিল বিনেশের। মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ার জন্য তাঁকে প্রতিযোগিতা থেকেই বাতিল করে দেওয়া হয় বুধবার সকালে। বিনেশ সারা রাত না খেয়ে, না ঘুমিয়ে, সাইক্লিং, জগিং করে এক কেজি ৯০০ গ্রাম ওজন কমিয়েছিলেন। চুল ছেঁটে, রক্ত বার করে নিয়েও ওজন ৫০ কেজিতে নামানো যায়নি। এই ঘটনায় নানা প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মহল।
(ভ্রম সংশোধন: রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচিত হতে হয় না। সেটি বছরের যে কোনও সময়ই হওয়া সম্ভব। এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। অনবধানবশত এই ভ্রান্তির জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী)